১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

samakalnew24
samakalnew24
শিরোনাম:
ফরিদগঞ্জের প্রখ্যাত হোমিও ডাক্তার নারায়ণ চক্রবর্তীর... তাহেরপুরের তিনশত বছরের বৃক্ষের নাম আজো অজানা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রাণিসম্পদের বিকল্প নেই : ইউএনও... প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী সড়ক দুর্ঘটনায় সংগীতশিল্পী পাগল হাসান সহ নিহিত-২ আহত-৩

বাগমারার ঐতিহ্য শাহী মসজিদ এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে

  সমকালনিউজ২৪

নাজিম হাসান,রাজশাহী প্রতিনিধি:

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার প্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শনের অন্যতম স্থান কামনগর শাহী জামে মসজিদ। প্রায় সাড়ে ৪ শ’ বছর আগের প্রাচীন যুগের ঐতিহাসিক নিদর্শন এই মসজিদটি প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে কালের সাক্ষী হিসাবে দাড়িয়ে আছে। মসজিদটি গঠন শৈলির দিক থেকে বাঘা-কুসুম্বা ও বাগধানী মসজিদের ডিজাইন ও নকশা থেকে কিছুটা আলাদা মডেলের। তাই অনুমান করা হয় এটি সমসাময়িক সময়েরও অনেক আগের তৈরি হতে পারে। কালের বিবর্তনে মসজিদটি আড়ালে ছিলো। এখন আবার সেখানে এলাকার মানুষ জুম্মার নামজসহ ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। এখন পর্যন্ত জেলার যে ক’টি প্রাচীন নিদর্শন রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম এটি।তবে ঐতিহাসিক এ মসজিদটির অভ্যন্তরের দেয়ালে ও মিনারে যে নিপুন হাতের কারুকার্য তা সাধারনত অন্য কথাও চোখে পড়ে না। মসজিদটির গায়ে রয়েছে পোড়ামাটির কারুকার্যের পাশাপাশি পার্সিয়ান খোদাই শিল্পের বিচিত্র ব্যবহার। তাই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে জামায়াত নিয়ে আসে মসজিদটিতে নামাজ পড়ার জন্য।বর্তমানে স্থানীয় লোকজন নিজ উদ্যোগে বারান্দাসহ মসজিদটির কিছু সংস্কার করেছেন। তবে মসজিদটির কারুকার্য ধরে রেখে প্রতœতাত্বিক মর্যাদায় এর সংস্কার করা খুব প্রয়োজন। এ জন্য তারা সংশিষ্টদের সহযোগীতা কামনা করেছেন। এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, রাজশাহী জেলা সদর থেকে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব প্রান্তরে বাগমারা উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের কামনগর গ্রামে ১৫ শতক জমির উপর প্রাচীন যুগের ঐতিহাসিক এ মসজিদটি অবস্থিত। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এ মসজিদটি কতদিন আগে নির্মিত হয়েছে তা কোথাও লিখা নেই। এছাড়া বিরল ডিজাইন ও নিপুন কারুকার্য বিশিষ্ট এ মসজিদটি কে নির্মান করেছিলেন তাও কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি। তবে প্রায় সাড়ে ৪শ’ বছর আগে মোঘল শাসনামলে গৌড় রাজ্যের বাদশা হোসেন শাহ’র আমলে এ অঞ্চলের কামনগর, মজিদততলা, মুগাইপাড়া, বিষহারা ও বারুইপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু মসজিদ নির্মিত হয়েছিলো। বর্তমান কামনগর শাহী জামে মসজিদটি ওইসব মসজিদেরই একটি হতে পারে বলে। তবে কালের বিবর্তনে অন্য মসজিদগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলেও এ মসজিদটি আজো সেকালের স্মৃতি ধরে রেখে প্রাচীন যুগের ঐতিহাসিক নিদর্শনের চিহ্ন বহন করে আসছে বলে এলাকার লোকজন মন্তব্য করেন।একজন অধ্যাপক বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়,১২০৪-০৫ সালের দিকে মুসলমানদের সেনাপতি বখতিয়ার খলজি হিন্দুদের বিখ্যাত রাজা লক্ষ্ণসেনকে হঠাৎ আক্রমন করে তাকে পরাজিত করেন এবং বাংলার রাজধানী (নদীয়া) জয় করেন। আর তখন থেকেই বাংলার উত্তারাঞ্চলে প্রথম মুসলিম শাসনের সূত্রপাত ঘটে। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে বাংলার সকল অঞ্চল মুসলমানদের অধিকারে আসে। এরপর পর্যায়ক্রমে মুসলমানদের সেনাপতি বখতিয়ার খলজি বাংলার উত্তারাঞ্চলে এ আকৃতির অনেকগুলো মসজিদ নির্মান করেছিলেন। এ মসজিদটিও ওই সমযয়ের হতে পারে বলে তিনি ধারনা করেন। এছাড়া সাড়ে ৪শ’ বছর আগে এ অঞ্চলে আদৌ কোনো লোকজন বসবাস করেছিলো কি না তার কোনো সঠিক প্রমান আজো পাওয়া যায়নি। কারন ওই সময় এ অঞ্চল গহীন বন-জঙ্গলে ভরা ছিলো। তাছাড়া প্রায় দেড় শ’ বছর আগেও নাকি এ মসজিদটির চারিদিকে গহীন বন-জঙ্গলে ভরা ছিলো। এ কারনে এলাকায় কথিত আছে মসজিদটি কোনো মানুষের তৈরি নয়। এটি জীনের তৈরি এবং জীনেরাই এখানে নামাজ পড়তো। এ রকম বহু নাটকীয় ঘটনা ও নানা জল্পনা-কল্পনার রহস্য জন্ম দিয়ে প্রাচীন যুগের ঐতিহাসিক নিদর্শনের চিহ্ন বহন করে কামনগর শাহী জামে মসজিদটি এখনো পথচারী ও দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষন করে দাঁড়িয়ে আছে।

প্রতিদিনের খবর পড়ুন আপনার ইমেইল থেকে
রাজশাহী বিভাগ বিভাগের সর্বশেষ
রাজশাহী বিভাগ বিভাগের আলোচিত
ওপরে