মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভুতি কি- মানুষ পেতে পারে না ….. ও বন্ধু। পঙ্গু এই ছেলেটির নাম হৃদয় মিয়া (২৭)। তাঁর স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই রয়ে গেল। ইচ্ছা ছিল লেখাপড়া করে সে একদিন বড় হয়ে সংসারের হাল ধরবে। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন ঘাতক ট্রাক আর পূরন হতে দিল না।
হৃদয় মিয়া সোমবার বিকেলে যুগান্তর কে দেয়া এক সাক্ষাতে বলেন, তাঁর বয়স যখন ২১, হাঠাৎ একদিন বাড়ীর সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাক চাপায় ডান পা ভেঙ্গে যায়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে বেশ ক‘বছর চিকিৎসা দেয়া হয়। শত কিছুর পরেও পা কাটতে দেয়নি হৃদয় মিয়া। তার বিশ^াস ছিলো সে একদিন সুস্থ্য হয়ে উঠবে, হাল ধরবে সংসারের। হতদরিদ্র এই ছেলের পরিবারের পক্ষে চিকিৎসার খরচ জোগানো সম্ভব না হওয়ায় বিগত ৩বছর যাবৎ বিনা চিকিৎসায় ভুগছে সে। ডাক্তার জানিয়েছে, পা না কেটে, অপারেশন মাধ্যমে বাঁকা পা সোজা করা সম্ভব কিন্তু তা অনেক ব্যয় বহুল। সংসারে বড় এক ভাই ও দুই বোন। বাবা সিরাজ মিয়া (৫২) একজন দিন মজুর। ছোট থেকেই সংসারের হাল ধরতে হয় ভাই হৃদয় মিয়ার। বাবা অন্যের জমিতে সারাদিন কাজ করে। আবার কোন দিন কাজ না থাকলে চুলোয় আগুনও জলে না। সারাদিন কাজ করে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে কোন রকম সংসার চালিয়ে ছেলের জন্য ঔষধ কেনা সম্ভব হয় না।
পঙ্গু হৃদয় মিয়ার বাড়ী নেত্রকোনা সদর উপজেলার সাতপাই এলাকায়। বর্তমানে দুর্গাপুর উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নের ফেচিয়া গ্রামে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ:সভাপতি মো. আলী আসগর এর সহায়তায় বসবাস করছে। হৃদয় মিয়া আরো বলেন, বাড়ীর সামনের রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাক চাপায় তার পা হারায়। আর তখন থেকেই তার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমাার হয়ে যায়। তার পরিবার গরীব হলেও সুখে শান্তিতে বসবাস করছিল তারা। একটি দুর্ঘটনা পুরো পরিবারটিকে ধ্বংস করে দিলো। আমি এখন ক্ষুধার জ্বালায় দুর্গাপুর পৌরশহরে ভিক্ষে করছি, এলাকায় ভিক্ষে করলে মানুষ দেখে ফেলবে। ভিক্ষার টাকা থেকে কিছু টাকা বাড়ীতে পাঠাই।
হৃদয় মিয়া, হাটতে চায়, এতোদিন কারো কাছে সাহায্য নেনয়নি সে। বর্তমানে ভিক্ষা করা ছাড়া তাঁর কোন উপায় নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ সমাজের বিত্তবান ব্যাক্তিদের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছে হৃদয় মিয়া, ডাক্তার বলেছেন অপারেশন করলে পা সোজা হয়ে যাবে। আবার সে হাটতে পাড়বে। এর জন্য প্রায় ৮লক্ষ টাকা প্রয়োজন। হৃদয় মিয়া কেঁদে কেঁদে বলেন, আমি ভিক্ষা করতে চাই না। আমায় একটু সহায়তা করুন, আপনাদের একটু সহায়তায় আমি আবার দাঁড়াতে পারবো। পায়ের অবস্থা নিয়ে ডা. রমজান হোসেন বলেন, এখনো সময় আছে, অপারেশন করাতে পারলে পা সোজা হয়ে যাবে। যদি না হয় তবে পায়ে পচন ধরে গেলে কেটে ফেলা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। আসুন হৃদয় মিয়া সহ তার পরিবারকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসি। হৃদয় মিয়ার সাথে এই নাম্বারে ০১৮৮১-১৬২৬৯৩ যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানিয়েছে।