৬ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ ২৩শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

samakalnew24
samakalnew24
শিরোনাম:
বরিশাল সিটি নির্বাচনে নৌকার সমর্থনে সাবেক এমপি মনি’র... দুর্গাপুরের শ্রান্ত জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায়... চাঁদপুর সদর হাসপাতাল থেকে ৪ দালাল গ্রেফতার আক্কেলপুরে বজ্রপাত প্রতিরোধে তালগাছের চারা রোপন রাস্তা সংস্কারের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

চাঁদপুরে চাঞ্চল্যকর  শিশু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন

  সমকালনিউজ২৪

কাজী নজরুল ইসলাম, চাঁদপুর: চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চাঞ্চল্যকর শিশু আদিল মোহম্মদ সোহান   হত্যাকাণ্ডের ৯ দিন পর  রহস্য উদঘাটন।

বুধবার  ২৪ ই মে দুপুরে   পুলিশ সুপার  কার্যালয়েরনএক  প্রেস বিজ্ঞপ্তি তে জানা যায় ,   গৃহশিক্ষক আবদুল আহাদ তাকে মুখ ও গলা চেপে হত্যা করেছে। ভারতের সিরিয়াল সিআইডি দেখে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। পুলিশের কাছে এমন তথ্য দিয়েছে হত্যাকারী।  গৃহশিক্ষক  আবদুল আহাদ  ( ১৮)  উপজেলার  রুদ্র গাঁও  গ্রামের  শরীফ তালুকদারের ছেলে। ওই গৃহশিক্ষক   সোহানকে প্রাইভেট পড়াতেন।

১৫ মে মাগরিবের নামাজ পড়ার পর সোহান বাড়িতে ফিরেনি। বহু খোঁজাখুঁজির পরও তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন সোহানের বাবা আনোয়ার একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ তাকে খুঁজে পায়নি। ১৯ মে একই বাড়ির রেনু বেগম ঘাস খেতের পাশে গাঁব পাড়তে গিয়ে তার একটি হাত মাটির উপরে, দেহ মাটি চাপা অবস্থায় দেখতে পান। তার ডাক চিৎকারে লোকজন ও পুলিশ ছুটে যান। তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর তদন্তে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পুলিশ জানায়, লাশ উদ্ধারের পর ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এরপর, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) পলাশ কান্তি নাথ, অফিসার ইনচার্জ আবদুল মান্নান, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার আইও মো. জামাল হোসের নেতৃত্বে তদন্তে নামেন। নানা মাধ্যমে তদন্তের পর পুলিশ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়ে আবদুল আহাদকে আটক করে। তাকে আটকের পর সে সোহানকে হত্যার বর্ণনা দেয়।

হত্যাকারী গৃহশিক্ষক  আবদুল আহাদ জানান, তিনি টাকার অভাবে ভুগছিলেন। তাই, মসজিদ থেকে বাড়ি ফেরার পথে আবদুল আহাদ সন্ধ্যা ৭টার দিকে সোহানকে পাশ্ববর্তী বাচ্চু মিয়ার বাড়ির দক্ষিণ পাশের পুকুর ঘাটে ডেকে নেয়। কথা বলতে বলতে সেখান থেকে দক্ষিণ পাশের নার্সারিতে নিয়ে মুখ ও গলা চেপে ধরলে সোহান নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এরপর, তাকে রেখে মুক্তিপণের জন্য সোহানের মা ফাতেমা বেগমের মোবাইল ফোনে একটি অপরিচিত সিম  কার্ড থেকে ম্যাসেজ পাঠায়। ফাতেমা বেগম মোবাইল ফোনটি ঘরে রেখে সোহানকে খুঁজতে যান। এ জন্য তিনি ম্যাসেজটি দেখেননি।

এদিকে, আবদুল আহাদ কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারে সোহান মারা গেছে। তখন আবদুল আহাদ নার্সারির ভেতর সোহনের মরদেহ রেখে বাড়ি ফিরে যায়। সোহানকে খোঁজার সময় আবদুল আহাদও সকলের সাথে মিশে খোঁজাখুঁজি করে। সোহানকে না পেয়ে সকলে বাড়ি ফিরে যায়। রাত ১ টার সময় আবদুল মতিনের মালিকানাধীন ঘাসের জমিতে একটি গর্ত খুঁড়ে সোহানের মরদেহ মাটি চাপা দেয় আবদুল আহাদ। এরপর, ম্যাসেজ পাঠানো সিম কার্ডটি মোবাইল ফোন থেকে খুলে বাচ্চু মিয়ার পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়। মাটি গর্ত করার কাজে ব্যবহৃত দা’টি পরিষ্কার করে রেনু বেগমের রান্না ঘরে রেখে আসে।

আবদুল আহাদ পুলিশকে জানায়, তিনি নিয়মিত ভারতের প্রাইভেট টিভি থেকে প্রচারিত সিরিয়াল সিআইডি দেখত। পারিবারিক আর্থিক অনটনের কারণে সোহানকে জিম্মি ও মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করে। টিভি সিরিয়াল সিআইডি দেখে সে ধারণা করেছিলো এভাবে মুখ চেপে ধরলে সোহান অজ্ঞান হবে ও তাকে আটক রেখে মুক্তিপণ নিবে। মুক্তিপণ পাওয়ার পর চোখে মুখে পানি ছিটা দিলে সোহানের জ্ঞান ফিরে আসবে ও তাকে ছেড়ে দিবে। এরপর, অপরিচিত সিমটি ফেলে দেবে। তার আরও ধারণা ছিলো, দীর্ঘদিন পড়ানোর কারণে সোহান কাউকে তার নাম বলবে না। পুলিশ মামলার নানা আলামত সংগ্রহ করেছে।

প্রতিদিনের খবর পড়ুন আপনার ইমেইল থেকে
চাঁদপুর বিভাগের সর্বশেষ
চাঁদপুর বিভাগের আলোচিত
ওপরে