ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর ঝুঁকির মুখে এখন সিলেট। প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বর্তমান সিলেট বিভাগের চার জেলায় মিলিয়ে ডেঙ্গু রোগির সংখ্যা দাড়িয়েছে ১শ’৩০এ। এর মধ্যে শুধুমাত্র সিলেটে এই রোগীর সংখ্যা ৬৯ জন। বৃহস্পতিবার সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ ও নগরীর কয়েকটি প্রাইভেট ক্লিনিকে খোঁজ নিয়ে এই তথ্য জানাগেছে।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগির সংখ্যায় সিলেটের পরই মৌলভীবাজারের স্থান। এই জেলায় রোগির সংখ্যা বৃহস্পতিবার বৃদ্ধি পেয়ে ২৯ জনে দাঁিড়য়েছে। হবিগঞ্জে বুধবার ১৫ জন থাকলেও বৃহস্পতিবার এই সংখ্যা ২৩ জনে বৃদ্ধি পেয়েছে। সুনামগঞ্জে এই সংখ্যা ৯ জন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সহকারি পরিচালক।
সিলেট জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নুরে আলম শামীম জানান, প্রতিদিন হাসপাতালগুলোতে নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। তবে তাদের কারো সিলেটে অবস্থান করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার হিস্টরি নেই। তারা বাইরে থেকে ডেঙ্গু ভাইরাস নিয়ে এসেছেন। তবে আক্রান্তদের অবস্থা ভালো। অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন।
মৌলভীবাজার থেকে আমাদের প্রতিনিধি জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৌলভীবাজারে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ জন। আক্রান্তরা ঢাকা থেকে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন।
মৌলভীবাজার সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২৯ জন। এদের মধ্যে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ১২ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন, ৫ জন মৌলভী পলি ক্লিনিকে, ১ জন লাইফ লাইন হাসপাতালে এবং বাকী ৭ জন চিকিৎসকের পরামর্শে নিজ বাড়িতে আছেন। এছাড়া ৪ জনকে সিলেটে রেফার্ড করা হয়েছে।
তাদের অবস্থা গুরুতর নয়। তবে অবস্থা গুরুত্বর হলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালের চতুর্থ তলায় আলাদা ডেঙ্গু কর্ণার চালু করা হয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। কিছু ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে মৌলভীবাজার জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও বিশ্রামে রাখতে হবে। আক্রান্তদের প্রচুর পানি ও তরল খাবার খাওয়াতে হবে। ডেঙ্গু আক্রান্তরা অন্য কোন ঔষধ সেবন না করে শুধু মাত্র প্যারাসিটামল খাবেন। এবং লেবুর শরবত পান করবেন। ডেঙ্গু মোকাবেলায় জনসাধারণকে মশারি টাঙ্গিয়ে ঘুমোতে বলছেন চিকিৎসকরা।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. শাহজাহান কবির চৌধুরী বলেন, ডেঙ্গু মোকাবেলায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্ক রয়েছে। মৌলভীবাজার জেলায় ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য প্রস্তুতি রয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৌলভীবাজারে এখনো কারো মৃত্যু হয়নি। আক্রান্তরা তত বেশী গুরুতর নয়।
এদিকে, মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে আরোও ২৫টি রেপিড টেস্ট ডিভাইস দিয়েছেন মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মো: ফজলুর রহমান। এর আগেও আরোও ২৫টি ডেঙ্গু নির্ণয় যন্ত্র দিয়েছিলেন।
সুনামগঞ্জ জেলায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯ জন। সুনামগঞ্জ সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসকি চিকিৎসক ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, এই ৯ জনের মধ্যে দুইজন ভালো হয়ে বাড়িতে গেছেন। দুইজন সিলেটে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর দুইজন সুনামগঞ্জ সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আক্রান্তরা ঢাকায় ছিলেন, সেখান থেকে ডেঙ্গু নিয়ে এসছেন, তবে তাদের অবস্থা ভালো।
হবিগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য তত্ত¡াবধায়ক ডা. রুহুল আমীন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত হবিগঞ্জ ২৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।