এইচ এম আয়াত উল্যা, নোয়াখালী: নোয়াখালীতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাথে প্রতা’ রণা করে সোর্স হওয়ার প্রস্তাব দিয়ে অবৈধ মা’ দক ব্যবসা করার একপর্যায়ে ডিবি পুলিশে জালে ইয়া’ বাসহ আ’ টক পড়লো মা’ দক কারবারি মো. শামীম আহাম্মদ ওরফে ইয়া’ বা শামীম (২৮) নামের এক যুবক। পরে তাকে মা’ দকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কা’ রাগারে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে ওই মা’ দক কারবারি শামীম কোর্টের মাধ্যমে জামিনে বের হয়ে তার ই’ য়াবা ব্যবসাকে আড়াল করতে উল্টো ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মা’ মলা দায়ের করে। যার বাদী তার বাবা মো. বদিউল আলম।
জেলা ডিবি পুলিশ সূত্র জানায়, প্রকৃত মা’ দক ব্যবসায়ী ও অপ’ রাধীদের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি অক্ষুন্ন রাখতে ডিবি পুলিশ মা’ দক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে নানা ধরনের কৌশলের আশ্রয় নেয়। তাই বিশেষ করে মা’ দক বেচাকেনার জন্য পরিচিত স্থানগুলোতে সোর্স ঠিক করেন। যেন দ্রুত ও বিশস্ততার সাথে মা’ দক ও মা’ দক কারবারিদের ধরতে সফল অভিযান পরিচালনা করতে পারেন।
এরই অংশ হিসেবে নোয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার ৮নং বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের কাজীনগর এলাকায় একজন সোর্স ঠিক করতে ওই এলাকায় যান। কাজীনগর এলাকার সুলতান মিয়া বাড়ীর মো. বদিউল আলমের ছেলে স্থানীয় কনফেকশনারী দোকানদার মো. শামীম আহমেদের সাথে আলাপ করে।
শামীম নিজেকে সাবেক পুলিশ সদস্য বদিউল আলমের ছেলে পরিচয় দিয়ে সোর্স হওয়ার আগ্রহ দেখায় এবং বলে তার কাছে অনেক ইয়া’ বা ব্যবসায়ীর যোগাযোগ আছে। এতে ডিবি পুলিশের সদস্যদের মধ্যে শামীমকে নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয় এবং খোঁজ নিয়ে জানতে পারে শামীম দোকানদারির আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় ইয়া’ বা ব্যবসা করে আসছিল। পাশাপাশি ডিবি সোর্স হওয়ার প্রস্তাব দিয়ে তার ইয়া’ বা ব্যবসার নেটওর্য়াককে আরো বিস্তৃত করার অভিনব প্রতা’ রণার আশ্রয় নিয়ে সুযোগের অপেক্ষায় ছিল।
এরপর থেকেই জেলা ডিবি পুলিশের একাধিক টিম শামীমের গতিবিধির উপর কড়া নজরদারি রাখে। এরই একপর্যায়ে গত ২৭ জুলাই রাত ১০টার দিকে জেলা শহর মাইজদীর সুধারাম মডেল থানাধীন নোয়াখালী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বার্লিংটন মোড়ে অবস্থানকালে জেলা ডিবি পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে হরিনারায়ণপুর মন্টু মিয়ার ফলজ বাগানের সামনে কতিপয় ব্যক্তি মা’ দক দ্রব্য ইয়া’ বা ট্যাবলেট ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য অবস্থান করছে।
ডিবি পুলিশের সদস্যরা তাৎক্ষণিক বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানায় এবং সংবাদের সত্যতা যাচাই করার জন্য রাত সোয়া ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখে মা’ দক কারবারি শামীম ও মো. জহির উদ্দিন পারভেজ নামে দুইজন ইয়া’ বা ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য অবস্থান করছে। ডিবি পুলিশ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তাদের আটক করতে সক্ষম হয় এবং শামীমের দেহ তল্লাশি করে। এসময় মা’ দক কারবারি শামীমের পরিহিত প্যান্টের ডান পকেট থেকে সাদা পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ১৪০ পিস (কমলা রংয়ের) ইয়া’ বা জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে ডিবি কার্যালয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরো জানায়, কাজীনগরের ইয়া’ বা বদি নামে খ্যাত এক মা’ দক কারবারির ছত্রছায়ায় ইয়া’ বা কারবারি শামীম ও তার সহযোগী পারভেজ দীর্ঘদিন ধরে নোয়াখালী জেলায় কম মূল্যে ইয়া’ বা ক্রয় করে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অধিক মূল্যে বিক্রয়ের মাধ্যমে স্কুল কলেজগামী ছাত্রছাত্রী তথা যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক নাজিম উদ্দিন আহমেদ জানান, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রে’ ফতারকৃত আসামী মো. শামীম আহাম্মদ নে’ শা জাতীয় মা’ দক দ্রব্য ইয়া’ বা ট্যাবলেট নিজ হেফাজতে রেখে তার সহযোগী মো. জহির উদ্দিন পারভেজ সহ বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে বহন করায় মা’ দক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ সনের ৩৬(১) এর ১০(ক)/৪১ ধারায় মা’মলা করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
এরপর মাদক কারবারি ইয়াবা শামীম কারাগার থেকে জামিনে বের হয়।
এদিকে তার বাবা বদিউল আলমকে বাদী করে ইয়া’ বা ব্যবসাকে আড়াল করতে উল্টো ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে।
একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে “কলেজ ছাত্রকে মা’ দক কারবারী সাজিয়ে ফাঁ’ সানোর অভিযোগ” শিরোনামে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে। বিষয়টি জেলা ডিবি পুলিশের দৃষ্টিতে পড়লে তারা দ্রুততার সাথে উক্ত মিথ্যা নিউজের বিষয়ে প্রতিবাদ লিপি দেন।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক নাজিম উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত ওই প্রতিবাদ লিপিতে জানানো হয়, ২৮ সেপ্টেম্বর তারিখে একাত্তর অনলাইন নিউজে “কলেজ ছাত্রকে মা’ দক কারবারী সাজিয়ে ফাঁ’ সানোর অভিযোগ” শিরোনামে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে নোয়াখালী জেলার গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। প্রকৃত পক্ষে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), নোয়াখালীর পুলিশ পরিদর্শক মো. আবুল হাশেম মজুমদার ও মো. সবজেল হোসেনের নের্তৃত্বে এসআই মো. সাঈদ মিয়া সঙ্গীয় অপর অফিসার-ফোর্স সহ গত ২৬ জুলাই তারিখে সুধারাম থানা এলাকার মা’ দক বিরো’ ধী অভিযান পরিচালনাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাত সোয়া ১০টার দিকে নোয়াখালী পৌরসভার হরিনারায়নপুর মন্টু মিয়ার ফলজ বাগানের সামনে থেকে মো. শামীম আহাম্মদ (২৮) বেগমগঞ্জ উপাজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের কাজীনগর এলাকার সুলতান মিয়ার বাড়ীর মো. বদিউল আলমের ছেলে এবং মো. জহির উদ্দিন পারভেজ (২৩) নোয়াখালী পৌরসভার মধ্যম করিমপুর এলাকার সাহাব উদ্দিন মাষ্টার বাড়ীর মো. দুলালের ছেলে সহ দুই মা’ দক কারবারিকে স্থানীয় নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে দেহ তল্লাশী করে আসামী মোঃ শামীম আহাম্মদের পরিহিত প্যান্টের ডান পকেট হতে ১৪০ পিস ইয়া’ বা ট্যাবলেট উদ্ধার করে এসআই মো. সাঈদ মিয়া।
পরিবর্তীতে বিধি মোতাবেক মা’ দক দ্রব্য জব্দ করেন এবং উক্ত ঘটনায় অফিসার ইনচার্জ, সুধারাম মডেল থানা, নোয়াখালী বরাবর এজাহার দায়ের করা হলে মা’ দকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে সুধারাম থানার মামলা নং-৪৫, তারিখ-২৭/০৭/২০২২ইং রুজু হয়।
আসামী মো. শামীম আহাম্মদের পিতা বদিউল আলম বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সাবেক সদস্য হওয়া স্বত্বেও নোয়াখালী ডিবি টিম সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থেকে শতভাগ পেশাদারিত্ব প্রদর্শন করে প্রকৃত মা’ দক ব্যবসায়ী ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি অক্ষুন্ন রেখে উক্ত মা’ দক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কিন্তু ২৮ সেপ্টেম্বর তারিখে উক্ত ঘটনায় একাত্তর অনলাইন নিউজে ডিবি পুলিশের ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে নোয়াখালী জেলা পুলিশ তথা পুলিশ বাহিনীর ভাবমুর্তি হ্মুন্ন হয়েছে। নোয়াখালী জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আমি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক নাজিম উদ্দিন আহমেদ এ ধরনের মিথ্যা সংবাদের তীব্র নিন্দা জানাই। এ ধরনের মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন থেকে একাত্তর অনলাইন পেইজকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাই।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম জানান, গত এক বছর ধরে জেলা পুলিশের বিভিন্ন বাহিনীর মাধ্যমে মা’ দক ব্যবসায়ী ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি অক্ষুন্ন রেখে মা’ দক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থান নিয়েছি। আমাদের সাফল্যকে নসাৎ করতে অবৈধ মা’ দক কারবারিরা যতই প্রতারণা ও কূট কৌশলের আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করবে। পুলিশ বাহিনী তাদের সেই অপচেষ্টা রুখে দিয়ে নোয়াখালী জেলা তথা সারা বাংলাদেশকে মা’ দক মুক্ত করে বঙ্গবন্ধুুর আদর্শ সোনার বাংলা গড়ে তুলবে।