বরগুনার আমতলীতে নিঃসন্তান বিধবাকে উৎখাত করার জন্য দেবর পুত্ররা নির্মম ষড়যন্ত্র চালিয়ে বসতঘর ভেঙ্গে লুটপাটসহ ৩ লক্ষাধিক টাকার গাছ কেঁটে সাবাড় করে দিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চন্দ্রা গ্রামে।
শনিবার সকালে সরজমিনে গিয়ে জানাগেছে, গত ১লা মে ২০১৯ তারিখ আমতলী উপজেলার চন্দ্রা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য নিঃসন্তান মৃত দলিল উদ্দিন খাঁনের বিধবা স্ত্রী সালেহা খাতুন (৭০) বার্ধক্যজনিত রোগে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী যান। সেখানে তিনি এক নাতনীর বাসায় অবস্থান করে এখনো ডাঃ মশিউর রহমানের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। তার এই দীর্ঘ অনুপস্থিতির সুযোগে তাকে বাড়ি থেকে উৎখাত করার জন্য তার দেবর আপ্তের আলী খানের পুত্র মিজান, মোস্তাফিজ, খোকন, ফজলু খান নির্মম ষড়যন্ত্র চালিয়ে গত ৬ জুলাই থেকে তার বসতঘর ভেঙ্গে লুটপাটসহ ৩ লক্ষাধিক টাকার মূল্যবান গাছ কেঁটে সাবাড় করে দিয়েছে। অসুস্থ্য সালেহা বেগম এখনো পর্যন্ত জানেননা তার কী সর্বনাশ হয়েছে।
বিশ্বস্তসূত্রে জানাগেছে, বিধবা সালেহা বেগমের স্বামী প্রদত্ত জমির আইল-সীমানা নিয়ে দেবর পুত্র মিজান, মোস্তাফিজ, খোকন, ফজলু বিরোধ সৃষ্টি করলে ২০১১ সালে সালেহা বেগম বাদী হয়ে তাদেরকে বিবাদী করে আমতলী সহকারী জজ আদালত, বরগুনায় বাটোয়ারা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৩৩/১১। সালেহা বেগম বৃদ্ধ হওয়ায় নোটারি করে মামলা পরিচালনার ভার তার ভাইয়ের ছেলে সাংবাদিক মুনশি আনোয়ারের ওপর অর্পণ করেন। বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে। ভাইয়ের ছেলে মুনশি আনোয়ারই বিধবা সালেহা খাতুনকে দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু ঘটনা চলাকালীন সময়ে তিনি তার অসুস্থ্য মেয়ের কাছে রংপুরে থাকায় লুটপাটের বিষয়টিতে বাঁধা দেয়ার মত কেউই ছিল না।
চাওড়া ইউনিয়নের (৭,৮,৯) সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য বিউটি বেগম জানান, প্রায় মাস খানেক পূর্বে মিজান, মোস্তাফিজ, খোকন, ফজলু খান তালগাছ, নারকেল গাছ, রেইনট্রি, মেহগনিসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক বিভিন্œ জাতের মূল্যবান গাছ কেঁটে নিয়ে গেছে। বশির নামক এক গাছ বিক্রেতার কাছে সেগুলো বিক্রি করে। এ সময় তারা বসতঘর ভেঙ্গে মালামাল লুটপাট করে নিয়ে গেছে।
স্থানীয় রুবেল ফকির বলেন, আপ্তের আলী খানের পুত্র মিজান, মোস্তাফিজ, খোকন, ফজলু খান বিধবা সালেহা বেগমের বসত বাড়ীর গাছপালা কেঁটে নিয়ে গেছে।
সালেহো বেগমের বসত ঘরের পাশের বাসিন্ধা আঃ মালেক খান বলেন, সালেহা বেগমের অনুপস্থিতিতে মিজান, মোস্তাফিজ, খোকন, ফজলু খান তালগাছ, নারকেল গাছ, রেইনট্রি, মেহগনিসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক বিভিন্ন জাতের মূল্যবান গাছ কেঁটে নিয়ে গেছে। বসত ঘর ভেঙ্গে লুটপাট করে নিয়ে গেছে।
সাংবাদিক মুনশী আনোয়ার বলেন, বিধবা সালেহা খাতুনকে দেখাশোনা ও মামলা পরিচালনার দায়িত্ব আমিই পালন করি। কিন্তু ঘটনা চলাকালীন সময়ে আমি আমার অসুস্থ্য মেয়ের কাছে রংপুরে ছিলাম। ঘটনা শুনে বৃহস্পতিবার আমি আমতলী এসে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি সালেহা বেগমের দেবর পুত্র মিজান, মোস্তাফিজ, খোকন, ফজলু খান বসতঘর ভেঙ্গে লুটপাট করে ৩ লক্ষাধিক টাকার মূল্যবান গাছ কেঁটে নিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে আপ্তের আলী খানের পুত্র মিজান খানের ব্যবহৃত মুঠোফোনে বারবার ফোন দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার বলেন, এ বিষয়ে কেহ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইগত ব্যবস্থা নেবো।































