৩১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১৫ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

samakalnew24
samakalnew24
শিরোনাম:
চাঁদপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ব্যবসায়ী নিহত চাঁদপুরে ইয়াবা-ফেন্সিডিলসহ যুবক-যুবতী আটক গ্রাহক সেবা পক্ষ উদযাপনে বেতাগীতে বৃক্ষরোপণ ও পুরস্কার... ইসাহাকের খুনিদের ফাঁসির দাবিতে পীরগঞ্জে বিক্ষোভ ও... পার্বতীপুরে ২৮ শে অক্টোবর লগি-বৈঠার নির্মম নারকীয়...

ইলিশের পেটে ইলিশ, কুয়াকাটায় পর্যটকদের বিনোদনের ধারার সংযোজন।

 মোঃহাসানুজ্জামান(অমি গাজী)কলাপাড়া পটুয়াখালী প্রতিনিধি। সমকাল নিউজ ২৪

Warning: Use of undefined constant yes - assumed 'yes' (this will throw an Error in a future version of PHP) in /home/samakaln/public_html/wp-content/themes/samakalnews24/template-parts/content.php on line 37

লেকের পানিতে ভাসছে ইলিশ। রোদের আলোতে রূপালী রং করছে চিকচিক। বিশাল আকৃতির ইলিশ দেখে উড়ে আসছে বক। ধেয়ে আসছে সিংহ, বাঘ। এদের পিছনে দৌড়ে আসছে সজারু, কচ্ছপসহ আরো অনেক বন্য প্রানী। কাঠের অবকাঠামোতে স্টিল দিয়ে ইলিশের অবিকল এক প্রতিকৃতিতে গড়া ইলিশ পার্ক হোটেল এন্ড রিসোর্ট। ৭২ ফুট দৈর্ঘের ইলিশটি পানিতে ভাসতে দেখে জীবন্ত মনে হলেও আসলে এটি পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের জন্য বিনোদনে এক নতুন সংযোজন।

কুয়াকাটা জিড়ো পয়েন্ট থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরের এই ইলিশ পার্ক দেখতে এখন ছুটে আসছে দেশ-বিদেশের পর্যটকরা। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ শিশু-বৃদ্ধদের কাছে এই পার্কটি যেন স্বর্গোদ্যানে পরিনত হয়েছে। প্রায় এক বিঘা জমির উপর গহীন বন্য প্রকৃতির আদলে তৈরি ইলিশ পার্কের মূল আকর্ষন ৭২ লম্বা বিশাল ইলিশের পেটের মধ্যে তৈরি রেষ্টুরেন্ট। এই রেষ্টুরেন্টে সরবরাহ করা হয় শুধুই সী-ফিস। বিলুপ্ত প্রায় সামুদ্রিক মাছ পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে তৈরি করা হয়েছে মৎস্য জাদুঘর। উপকূলীয় এলাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য ও রাখাইন সংস্কৃতি পর্যটকদের জন্য কাছে তুলে ধরতে রয়েছে ফটোগ্যালারী। লেকের মধ্যে রয়েছে ২২ ফুট লম্বা একটি সাম্পান কটেজ। শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে “শিশুদের রাজ্য ও ভুতের বাড়ি” নামে দুটি পার্ক। এখানে রয়েছে খেলার বিভিন্ন সামগ্রী, ছবি তোলার জন্য পুতুল ও বন্য পশু-পাখি। সবুজে ঘেরা এই ইলিশ পার্ক দিনের আলোতে উপভোগের জন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বন্য জগত তৈরি করা হয়েছে। আর রাতের অন্ধকারে পার্কটি লেজার শো ও রং-বেরঙের আলোতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সমুদ্রের মাঝের দ্বীপের আদলে।

পার্কের প্রশস্থ মাঠে বাহারি ফুলের বাগানের মাঝে সাজানো রযেছে বন্য প্রানীর প্রতিকৃতি। কাঠের বসার আসন গুলোর রয়েছে আলাদা বৈচিত্র। কোন গাছের তৈরি তা চেনার উপায় রাখা হয়েছে। আবহমান বাংলার লোকশিল্প, বণ্য প্রানীসহ বিভিন্ন পাখির সংগ্রহশালা। স্থির চিত্র সম্ভারে রয়েছে গভীর সমুদ্রে মৎস্য শিকারী ও রাখাইন সম্প্রদায়ের কর্মের জীবনচিত্র। লেকের স্বচ্ছ পানিতে সাঁতরে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। ইচ্ছে হলে নিজেই বড়শি দিয়ে ধরে খেতে পারবেন। মোহনীয় গানের সুরের মুর্ছনায় পার্কে ঘুরে দর্শনার্থীরা খুজে পায় প্রকৃতির এক অপরূপ ছোয়া। রাতের ইলিশ পার্ক হয়ে ওঠে আরো মনোমুগ্ধকর আর নান্দনিক।
শুধু পহেলা বৈশাখ নয় কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের প্রতিদিনই যেন পহেলা বৈশাখ অনুভব হয়। সারা বছর এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন থাকে ইলিশ পার্কে। প্রতিদিন পান্তা ইলিশসহ থাকছে শর্ষে ইলিশ, ইলিশ ভুনা, ইলিশ কারি, ইলিশ ফ্রাইসহ ৩০ প্রকারের ভর্তা, চাটনীসহ বাহারি নকশী পিঠা। আর এসব খাবার পরিবেশেন করা হয় মৃৎশিল্পীদের তৈরী মাটির পাত্রে। প্রতিদিন রাতে লেকের পাল তোলা সাম্পানে থাকছে বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতির বাউলগান, জারীগান, পল্লীগীতি, ভাটিয়ালী গানের আয়োজন।

দর্শনার্থী লামিয়া জানান, সারাদিন সমুদ্রে অবগাহনে ক্লান্ত পর্যটকদের বাড়তি বিনোদনে ইলিশ পার্ক এক বৈচিত্র এনে দিয়েছে কুয়াকাাটয়। ইলিশ পার্কের ব্যতিক্রমী নানা আয়োজন আরো বেশী আনন্দ ও ভিন্ন মাত্রা দিচ্ছে পর্যটকদের। ইলিশ পার্কে একাধিক ষ্টাফ জানান, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কুয়াকাটায় শিক্ষা সফরে আসলে এই পার্কে ঘুরে যাচ্ছেন। তাদের ভ্রমনের অধিকাংশ সময়ই কাটছে এখানেই।
ইলিশ পার্কের স্বপ্নদ্রস্টা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের সূর্যাস্ত আর সূর্যোদয় দেখার পর আর কিছু না থাকায় বাড়তি বিনোদনের জন্য ইলিশ পার্কের পরিকল্পনা করেছেন। ব্যাতক্রমী এই পার্কে পর্যটকদের জন্য নেয়া হয়েছে ভিন্ন ধরনের আয়োজন। বসন্তবরনসহ ভালবাসা দিবসে থাকছে ব্যাতিক্রমী আয়োজন।

প্রতিদিনের খবর পড়ুন আপনার ইমেইল থেকে
পটুয়াখালী বিভাগের আলোচিত
ওপরে