ঈদুল আযহার ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। আমতলীর অভ্যান্তরিন ও দূরপাল্লার বিভিন্ন রুটের যাত্রীবাহী বাসের যাত্রীদের কাছ থেকেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোন কোন রুটের যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুন ভাড়া আদায় করছে বলে বাস যাত্রীরা অভিযোগ করেন।
বিশ্বস্থ সূত্রে জানাগেছে, ঈদুল আযহার ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের কাছে থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। আমতলী থেকে প্রতিদিন দূরপাল্লা রুটে দিন ও রাতে সাকুরা, সুগন্ধা, মেঘনা, তুহিন, সৌদিয়া, ঈগল, নিউ সোহাগ, মিমজাল, রোহান, যাতায়াত, গ্রামীন, দক্ষিন বাংলা, ইসলাম, কনক, মল্লিক, বনফুল, আবদুল্লাহ, নবীনবরন, বেপারী, সার্বিক, হানিফ, কুয়াকাটা, সমুদ্র সৈকত, গোল্ডেন লাইন, রয়েল, অন্তরা, আকিব, অথি, দক্ষিনবাংলা, চাকলাদারসহ বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানীর ৬০/৭০টি দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস চলাচল করে। এর মধ্যে আমতলী- ঢাকা, আমতলী- রংপুর, আমতলী- নারায়নগঞ্জ, আমতলী- বেনাপোল, আমতলী- চট্রগ্রাম, আমতলী- যশোর, আমতলী- খুলনাসহ বিভিন্ন দূরপাল্লার রুটের যাত্রীবাহী বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
আমতলী- ঢাকা রুটে পূর্বের ভাড়া ছিল জনপ্রতি ৫০০ টাকা বর্তমানে নেওয়া হচ্ছে ৮০০ টাকা। আমতলী- চট্রগ্রাম রুটে পূর্বের ভাড়া ছিল জনপ্রতি ৯৩০ টাকা বর্তমানে নেয়া হচ্ছে ১৪০০ টাকা। আমতলী- রংপুর রুটে পূর্বের ভাড়া ছিল জনপ্রতি ৯০০ টাকা বর্তমানে নেয়া হচ্ছে ১২০০ টাকা ও আমতলী- বেনাপোল রুটে পূর্বের ভাড়া ছিল জনপ্রতি ৫৫০ টাকা বর্তমানে নেয়া হচ্ছে ৬০০ টাকা।
সাকুরা পরিবহনের যাত্রী মোঃ শামিম বলেন, তিনি ঢাকা যাওয়ার জন্য তিনটি টিকেট কেঁটেছেন ২৪০০ টাকায়।
চট্রগ্রামগামী সৌদিয়া পরিবহনের যাত্রী মোঃ মোশারেফ হোসেন, সুফিয়া খাতুন বলেন, পূর্বে আমতলী থেকে চট্রগ্রাম যেতে জনপ্রতি বাস ভাড়া ৯৩০ টাকা নেয়া হলেও এখন ১৪০০ টাকা ভাড়া নিচ্ছে।
কথা হয় বেনাপোলে যাওয়ার জন্য সেভেন ষ্টার পরিবহনের কাউন্টারে অবস্থান করা যাত্রী সুবল দাশের সাথে। তিনি জানান, ৫৫০ টাকার টিকেট ৬০০ টাকায় কেঁটেছেন।
রংপুরগামী বাসযাত্রী চাকুরীজীবি তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ঈদুল আযহার ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের কাছে থেকে বিভিন্ন কোম্পানীর বাস মালিকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন।
আমতলী দূরপাল্লার বাস কাউন্টার ইনচার্জ সমিতির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রতিটি দূরপাল্লার রুটের যাত্রীবাহী বাসে সরকারীভাবে যে ভাড়া নির্ধারন করা হয়েছে তার চেয়ে ৫০/১০০ টাকা বেশী (বকশিস) নেয়া হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দূরপাল্লার বাস কাউন্টার ইনচার্জ বলেন, বাস মালিকরাই ঈদের ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সেভাবেই আমরা যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নিচ্ছি।
এছাড়া অভ্যান্তরিন রুটেও বেশী ভাড়া আদায় করা অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমতলী- বরিশাল রুটে পূর্বের ভাড়া ছিল জনপ্রতি ১৪০ টাকা এখন নেয়া হচ্ছে ১৬০ টাকা, পটুয়াখালী- আমতলী রুটে পূর্বের ভাড়া ছিল জনপ্রতি ৫০ টাকা এখন নেয়া হচ্ছে ৭০ টাকা। কলাপাড়া- আমতলী রুটে পূর্বের ভাড়া ছিল ৩০ টাকা এখন নেয়া হচ্ছে ৪০ টাকা ও আমতলী- কুয়াকাটা রুটে পূর্বের ভাড়া ছিল জনপ্রতি ৮০ টাকা এখন নেয়া হচ্ছে ১০০ টাকা।
আমতলী- বরিশালগামী সেকান্দার পরিবহনের যাত্রী কামাল, ঐশি ও সজল অভিযোগ করেন, পূর্বের জনপ্রতি ১৪০ টাকার টিকেট এখন ১৬০ টাকায় কেঁটেছেন।
বাড়তি টাকা কেন নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে লোকাল বাস কাউন্টার থেকে জানানো হয় ঈদের কারনে জনপ্রতি ২০ টাকা বেশী নেয়া হচ্ছে ঈদের বোনাস হিসেবে।
এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কমলেশ মজুমদার বলেন, ভাড়া বেশী নেওয়ার বিষয়টি আমি জেনেছি। গতকাল দূরপাল্লা রুটের সকল কাউন্টার ইনচার্জদের ডেকে সাবধান করে দিয়েছি। এরপরও যদি তারা যাত্রীদের কাছ থেকে বেশী ভাড়া আদায় করে তাহলে সুনির্দ্দিষ্ট তথ্যের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।