১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

samakalnew24
samakalnew24
শিরোনাম:
ফরিদগঞ্জের প্রখ্যাত হোমিও ডাক্তার নারায়ণ চক্রবর্তীর... তাহেরপুরের তিনশত বছরের বৃক্ষের নাম আজো অজানা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রাণিসম্পদের বিকল্প নেই : ইউএনও... প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী সড়ক দুর্ঘটনায় সংগীতশিল্পী পাগল হাসান সহ নিহিত-২ আহত-৩

উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়ম

  সমকালনিউজ২৪

মো: মনিরুল ইসলাম কুয়াকাটা প্রতিনিধি ::

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে নির্বিচারে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। গত কয়েক দিন ধরে দিনরাত স্কুবিটার (ভেকু) মেশিন দ্বারা এ বালু কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অন্যত্র। জেলা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে উপকূলীয় বেরিবাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না সিআইসিও কোম্পানী এভাবে হাজার হাজার সিএফটি বালু ট্রাক ভরে নিয়ে যাচ্ছে। কোম্পানীটির দাবী পাউবো’র প্রকৌশলীর অনুমতি নিয়েই সমুদ্র পাড় থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অপরদিকে প্রকল্পের ৪৮ নং পোল্ডারের দ্বায়িত্বরত প্রকৌশলী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির ওই বক্তব্যকে মিথ্যা বলে অবহিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানায়, কুয়াকাটা পৌর মেয়র আ. বারেক মোল্লা ও লতাচাপলী ইউপি চেয়ারম্যান আনসার উদ্দিন মোল্লার ভাই প্রকল্পের সুবিধাভোগী স্থানীয় প্রভাবশালী মোশারফ মোল্লার সহযোগিতায় এক সপ্তাহ ধরে চলছে এমন কর্মকান্ড। বেড়িবাধঁ মেরামতের নামে এভাবে সমুদ্রের বালু উত্তোলনের ফলে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা রক্ষায় সরকারের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হচ্ছে বলে মনে করছেন জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা।

উপকূলীয় বাধঁ উন্নয়ন প্রকল্প, ফেজ-১ (সিইআইপি-১)র আওতায় কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত লাগোয়া ঝুকিঁপুর্ণ ৪৮ নং পোল্ডারের সংস্কার কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে এ বেড়িবাধঁ নির্মাণ কাজ করছে চায়নার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিআইসিও কোম্পানী। প্রকল্পের শুরু থেকেই স্থানীয় প্রভাবশালী সুবিধাভোগী মোশারফ মোল্লার সহযোগিতায় কোম্পানীর দ্বায়িত্বরত প্রজেক্ট ইনচার্জ মি. জ্যাং কাজের ক্ষেত্রে কোন নিয়ম কানুনই মানছে না। শুকনো মাটির পরিবর্তে বালু, জিও টেক্সটাইল ব্যাগের পরিবর্তে প্লাস্টিকের বস্তা, নদীর পাড় কেটে বাঁধের মাটি সংগ্রহসহ নানা অনিয়ম ও অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েন। প্রকল্পের কাজের মান নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।

সর্বশেষ বিদেশী ওই কোম্পনীটি মোশারফ মোল্লার সহায়তায় কুয়কাটা বেড়িবাধেঁর কোলঘেঁষে অবস্থিত হোটেল সাগরকন্যা, বেঙ্গল গেষ্ট হাউজ ও সী-ভিউ হোটেলের সম্মুখভাগ থেকে সমুদ্রের বালু প্রায় বিশ থেকে পঁচিশটি ট্রাকে করে গত এক সপ্তাহ ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে লতাচাপলী ইউনিয়নের মাইটভাঙ্গা ও গোড়া আমখোলাপাড়া এলাকায়। এর আগেও এ কোম্পানীটি সমুদ্র সৈকত থেকে বালু নিয়ে অন্যত্র কাজে লাগিয়েছেন। পরে উপজেলা প্রশাসনের বাঁধার মুখে বালু নেয়া বন্ধ করতে বাধ্য হয়। কিন্তু কিছুদিন বন্ধ থাকলেও মোশারফ মোল্লার সহযোগিতায় সিআইসিও নামের চায়না কোম্পানীটি ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠেছে। এখন আবার নেয়া হচ্ছে সমুদ্রের বালু। বালু উত্তোলনের ফলে হুমকি মুখে পরেছে কুয়াকাটার সমুদ্র সৈকত। নষ্ট হচ্ছে চলাচলে রাস্তা।

স্থানীয় বাসিন্দা মুজিবুল হক মধু, সাউথ বীচ হোটেলের কেয়ারটেকার আনোয়ারসহ একাধিক ব্যাক্তি জানান, সমুদ্রের কোল ঘেঁষে বসবাসকরা স্থানীয়রা নিজেদের প্রয়োজনে এক ভ্যান বালু নিয়ে ব্যবহার করতে না পারলেও গত কয়েকদিন ধরে রাত-দিনে স্কুবিটার (ভেকু) দিয়ে বালু কেটে ২০-২৫টি ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দশ চাকার এসব ট্রাকের প্রতিটিতে ৬’শ থেকে ৭’শ ফুট বালু ধারণ ক্ষমতার ভারী যানের শব্দে রাতে পর্যটকসহ স্থানীয়রা ঘুমাতে পারে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানায়, নদীপাড় কেটে মাটি নেয়ার অপরাধে মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে মোশারফ মোল্লাকে দুই লক্ষ টাকা জরিমানা করে কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত।

চায়না সিআইসিও কোম্পানীর স্থানীয় প্রজেক্ট ইনচার্জ মি. জ্যাং’র মুখপাত্র দো-ভাষী ইমন ইসলাম জানান, বেড়িবাধেঁর স্লোপের নিচের বালু নেয়ার অনুমতি রয়েছে তাদের। পাউবো’র প্রজেক্ট প্রকৌশলীর অনুমতি নিয়েই বালু নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

উপকূলীয় বাধঁ উন্নয়ন প্রকল্প, ফেজ-১ (সিইআইপি-১) ৪৮ এবং ৪৭/২ পোল্ডারের দায়িত্বরত প্রকল্প প্রকৌশলী মজিবর রহমান (সিএসই) বলেন, তিনি বা তার অফিস কাউকে বেড়িবাধেঁর কোলঘেঁষে থাকা সমুদ্রের বালু নেয়ার অনুমতি দেয়নি। চায়না প্রজেক্টের ইনর্চাজের মুখপাত্র মিথ্যা বলেছেন। তবে মুঠো ফোনে বালু উত্তোলনে নিষেধ করে দিবেন বলে তিনি জানান।

 

‘বিদ্রঃ সমকালনিউজ২৪.কম একটি স্বাধীন অনলাইন পত্রিকা। সমকালনিউজ২৪.কম এর সাথে দৈনিক সমকাল এর কোন সম্পর্ক নেই।’

প্রতিদিনের খবর পড়ুন আপনার ইমেইল থেকে
পটুয়াখালী বিভাগের সর্বশেষ
পটুয়াখালী বিভাগের আলোচিত
ওপরে