খরচ কমানোয় মুনাফা বেড়েছে ইউরোপের বৃহত্তম ব্যাংক এইচএসবিসি’র। প্রথম প্রান্তিকে প্রত্যাশার তুলনায় ভালো করেছে ব্যাংকটি।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে তাদের কর-পূর্ববর্তী মুনাফা হয়েছে ৬২১ কোটি ৩০ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের ৪৭৫ কোটি ৫০ লাখ ডলারের তুলনায় ৩০ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। এইচএসবিসি পরিচালিত জরিপে অংশ নেয়া বেশির ভাগ বিশ্লেষকের পূর্বাভাস ছিল ৫৫৮ কোটি ডলার। খবর বিবিসি, সিএনবিসি।
এইচএসবিসির প্রধান নির্বাহী জন ফ্লিন্ট বলেন, যখন বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা ক্রমেই জেঁকে বসছে, তখন এ ফলাফল উৎসাহজনক। এ প্রান্তিকে এইচএসবিসির আয় ১ হাজার ৪৪২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের ১ হাজার ৩৭১ কোটি ডলারের তুলনায় ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ বেশি। বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস ছিল, প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটির আয় হবে ১ হাজার ৩৭৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
মুনাফার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর হংকং ট্রেডিংয়ে ব্যাংকটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ২ শতাংশের বেশি। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ব্যাংকটির শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
জন ফ্লিন্ট বলেন, রিটেইল ব্যাংকিং, ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট ও কমার্শিয়াল ব্যাংকিং ব্যবসার শক্তিশালী আয় প্রবৃদ্ধি তাদের মুনাফা বাড়াতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
নিজেদের বিবৃতিতে এইচএসবিসি বলছে, প্রথম প্রান্তিকে এশিয়ায় ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে এবং গত বছরের তুলনায় এ প্রান্তিকে অঞ্চলটিতে আয় বেড়েছে ৭ শতাংশ। চলতি প্রান্তিক নিয়ে টানা তিন প্রান্তিক এশিয়ায় মুনাফা করল ব্যাংকটি।
আয় প্রতিবেদন থেকে আরো জানা যাচ্ছে, ব্যয় হ্রাসে এইচএসবিসি বেশ অগ্রগতি করেছে। প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটির পরিচালন ব্যয় কমেছে ১২ শতাংশ। ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় ৪০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২১ সেন্ট। একদিকে ব্যয় হ্রাসে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এইচএসবিসি, অন্যদিকে রিটেইল ও ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট বিভাগে বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
ব্যাংকটির যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা প্রত্যাশিত ফল না দিলেও মুনাফায় ফিরেছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা থেকে ব্যাংকটি মুনাফা করেছে ৩৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। ২০১৮ সালের প্রথম তিন মাসে ব্যাংকটির যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসার কর-পূর্ববর্তী লোকসান ছিল ৫৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ব্যাংকটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তবে তারা এটিও মনে করিয়ে দিয়েছে, এখানে তাদের সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়।
চলতি বছরের প্রথম দিকে এইচএসবিসি সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছিল, চীনা অর্থনীতির শ্লথগতির কারণে তাদের মুনাফা কমতে পারে। ২০১৮ সালে ঋণদাতা সংস্থাটি জানিয়েছিল, মুনাফার ক্ষতি না করে চীনে এবং প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে আগামী তিন বছর ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে তারা।