খুলনার দক্ষিনঞ্চলের সুন্দরবন উপকূলীয় কয়রা উপজেলায় কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদীর জোয়ারের চাপে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধে ৬ টি স্থানে ভাঙন তীব্রতর হয়েছে। এতে আতংকিত হয়ে পড়েছেন জনপদের মানুষ। ভাঙন কবলিত স্থান গুলো দ্রুত সংস্কারের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এদিকে পাউবো কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভাঙন কবলিত এসব স্থান দ্রুত সংস্কারের জন্য বরাদ্দ চেয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
কয়রা উপজেলায় পাউবো’র ১৩-১৪/২ নম্বর পোল্ডারের কাটকাটা, মঠবাড়ি, ৪ নম্বর কয়রা, চরামুখা, আংটিহারা ও দশহালিয়া এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছরের এ সময় নদীতে জোয়ারের পানির চাপ বাড়ে। যে কারনে দীর্ঘ দিন সংস্কার কাজ না হওয়া দুর্বল বাঁধ গুলো পানির চাপে সহজেই ধ্বসে যায়। গত কয়েক বছর ধরে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে এসব এলাকার শতাধিক পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন।
উপজেলার শাকবাড়িয়া নদী তীরবর্তি পুর্ব মঠবাড়ি গ্রামের রাম কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, ‘আমাগের বাড়ি-ঘর সব গাঙের (নদী) নীচি চলি গেছে। এখন আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে পরের জাগায় বসত করতিছি।’ তার অভিযোগ, প্রতি বছর ভাঙন শুরু হলে পাউবো কর্তৃপক্ষ তাদের নিয়োজিত কিছু লোক দিয়ে দায়সারা ভাবে কিছু মাটির কাজ করেন। কোন সময় অল্প কিছু বালির বস্তা ফেলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেন। ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ি সমাধান না থাকায় বছরের পর বছর এর ফল ভোগ করছেন তারা।
গত দুই বছরের ব্যবধানে রাম কৃষ্ণ মন্ডলের মত পুর্ব মঠবাড়ি গ্রামের অন্তত ২০টি পরিবারকে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে বসতভিটে হারাতে হয়েছে। আর কিছু দিনের মধ্যে নদীর জোয়ারের চাপ আরো বাড়বে। তখনই ভাঙন তীব্র হয়ে দেখা দেবে। এ কারনে ভাঙন আতংকে রয়েছে ওই গ্রামের আরো ৩০ টি পরিবার। এছাড়া কাটকাটা, দশহালিয়া, ৪ নম্বর কয়রা, আংটিহারা ও চরামুখা এলাকায় ভাঙন আতংকে দিন পার করছে আরো ৫০ পরিবারের বাসিন্দা। সেই সঙ্গে আতংকে রয়েছেন শতাধিক চিংড়ি ঘের মালিক।
‘ইতিমধ্যে স্থানীয় নদী গুলোতে জোয়ারের পানির চাপ বাড়তে শুরু করেছে। কয়েক দিন পর চাপ আরো বাড়বে। তখন বাঁধের ভাঙন তীব্র রুপ নেবে। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত চিহ্নিত এলাকা গুলিতে বাঁধ সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়েছি এলাকাবাসী।’