২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

samakalnew24
samakalnew24
শিরোনাম:
ডাকাতিয়া নদী থেকে বালু উত্তোলন ব্যবসায়ীকে ১ লাখ টাকা... সাপাহারে রহমতের বৃষ্টি কামনায় ইস্তিসকার নামাজ আদায় ছড়ার পানিই ভরসা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বরগুনায় হাজারের ওপর ডায়রিয়া আক্রান্ত, জায়গা নেই... বকশীগঞ্জে তীব্র তাপদাহে জনজীবনে হাঁসফাঁস, ভোগান্তি...

খুলনায় ৩২৫টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে ৩ লাখ মানুষ

 অনলাইন ডেস্ক: সমকালনিউজ২৪
খুলনায় ৩২৫টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে ৩ লাখ মানুষ May 3, 2019 9:10 pm3 Min Read

ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে খুলনার উপকূলীয় এলাকার তিন লক্ষাধিক মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে।

আজ শুক্রবার দুপুর থেকেই জেলার উপকূলীয় উপজেলা দাকোপ, কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলার সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন এলাকার মানুষ সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে যাওয়া শুরু করে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩২৫টি সাইক্লোন শেল্টার প্রায় ৩ লাখ মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে যায়।

খুলনার জেলা প্রশাসক মো. হেলাল হোসেন বাসস’কে জানান, খুলনার উপকূলীয় এলাকায় ছয় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। এরমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ৩ লাখ মানুষকে সাইক্লোন শেল্টারে নিয়ে আসা হবে বলে বাসস’কে তিনি নিশ্চিত করেন।

এদিকে, উপকূলীয় অঞ্চলে বিপদ সংকেতের লাল পতাকা উড়ানো হয়েছে। সবাইকে সতর্ক করতে মাইকিং করা হয়েছে। দুপুর দেড়টা থেকে দমকা বাতাসের সঙ্গে খুলনায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। এতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে কয়রা উপজেলার বাগালী ইউনিয়নের হোগলা, কয়রা ইউনিয়নের গোবরা, ঘাটাখালী, হরিণখোলা, উত্তর বেদকাশীর গাজীপাড়া, বিনাপানি, গাব্বুনিয়া, দক্ষিণ বেদকাশির জোড়শিং, চোরামুখা, আংটিহারা, গোলখালী, খাশিটানা, মহেশ্বরীপুরের সরদারঘাট, পাইকগাছা উপজেলার শিবসা পাড়ের গড়ইখালী ইউনিয়নের গড়ইখালী, দাকোপের বাণিশান্তা, বাজুয়া, কামারখোলা, সুতারখালী, কালাবগী, নলিয়ান, জেলেখালী, জয়নগর, গুনারী এবং বটিয়াঘাটা উপজেলার শিয়ালীডাঙ্গা এলাকা।

শুক্রবার সকাল থেকে সরেজমিনে উপকূলীয় উপজেলা দাকোপের পানখালি ও ঝপঝপিয়া নদীর আশপাশের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল ১১টার পর থেকেই মানুষ প্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে আসছে। আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে মজুদ করা হচ্ছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাসেবকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা করছে।

দাকোপের বিভিন্ন নদীতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২/৩ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। পানখালি ইউনিয়নের ভদ্রা নদীর পানির চাপে ১নম্বর গেটের পাটাতন ভেঙ্গে বিলে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়া ঝপঝপিয়া নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ফেরিঘাটের পল্টুন ডুবে গিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হবার উপক্রম হয়েছে।

কয়রার দক্ষিণ বেদকাশীর ইউনিয়নের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির টিম লিডার মো. মশিউর রহমান বলেন, সকাল থেকে আবহাওয়া ভালো থাকায় মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছিল না। তবে দুপুরে আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করলে মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে যাওয়া শুরু করে। বিশেষ করে নারী, বৃদ্ধ ও শিশুদের জরুরি ভিত্তিতে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

কয়রা সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ইতোমধ্যে অনেক মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে।

জেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সদস্য, ত্রাণ শাখার প্রধান সহকারী শাহানা বেগম দুপুরে এ প্রতিবেদককে বলেন, খুলনার কয়রা উপজেলার ১১৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৫০ হাজার পরিবার, দাকোপ উপজেলার ৯৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৫০ হাজার পরিবার এবং পাইকগাছা উপজেলার ৩৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১০ হাজার ও বটিয়াঘাটা উপজেলার ২০টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১ হাজার পরিবারকে নেওয়া সম্ভব হয়েছে।

জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ার্দার বলেন, ঘূূর্ণিঝড় ফণীর সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে আগে-ভাগেই খুলনা জেলার ৩২৫টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপকূলীয় উপজেলা কয়রায় ১হাজার ৯৫ জন ও দাকোপ উপজেলায় ১ হাজার ৩৬৫জন স্বেচ্ছাসেবকসহ ২ হাজার ৪৬০জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি এবং নয়টি উপজেলায় নয়টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনকে সতর্ক করতে উপকূলীয় উপজেলাগুলোতে মাইকিং করা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি সামাল দিতে ১১৪ টি মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, শুক্রবার দুপুর দেড়টার পর থেকেই খুলনায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তিনি জানান, দুপুর ২টায় খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তিনি বলেন, ফণী ঘূর্ণিঝড়টি মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। আজ মধ্যরাত নাগাদ এটা খুলনার উপকূল এলাকা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ফণী অতিবাহিত হওয়ার সময় খুলনা অঞ্চলে ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিতে দমকা বাতাস ও ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টি থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সূত্র: বাসস

প্রতিদিনের খবর পড়ুন আপনার ইমেইল থেকে
খুলনা বিভাগের সর্বশেষ
খুলনা বিভাগের আলোচিত
ওপরে