১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

samakalnew24
samakalnew24
শিরোনাম:
ফরিদগঞ্জের প্রখ্যাত হোমিও ডাক্তার নারায়ণ চক্রবর্তীর... তাহেরপুরের তিনশত বছরের বৃক্ষের নাম আজো অজানা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রাণিসম্পদের বিকল্প নেই : ইউএনও... প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী সড়ক দুর্ঘটনায় সংগীতশিল্পী পাগল হাসান সহ নিহিত-২ আহত-৩

চিলমারীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ৩০ হাজার মানুষ পানি বন্দি

 আরিফুল ইসলাম সুজন,চিলমারী, সমকালনিউজ২৪

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও কয়েকদিনের টানা প্রবল বর্ষণে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়ে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে অষ্টমীরচর, চিলমাারী, থানাহাট, রমনা ও নয়ারহাট ইউনিয়নে গত ৪দিনে নদী ভাঙ্গনে প্রায় ১৬৫টি বাড়ি ও ৬টি দোকান নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

পিআইও অফিস সূত্রে জানাগেছে, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ৯৯৫ পরিবার, নয়ারহাট ইউনিয়নের ১,১৭৪ পরিবার, থানাহাট ইউনিয়নের ৬৭৫ পরিবার, রমনা ইউনিয়নের ৯৭৮ পরিবার, চিলমারী ইউনিয়নের ৮৯৮ পরিবার ও অষ্টমীরচর ইউনিয়নের ১,২৯৩ পরিবার মিলে ৬হাজার পরিবারের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বন্দি মানুষগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। পানি দ্রুত বৃদ্ধির ফলে, কোন বাড়িতে কোমর পানি এবং বসত ঘরে হাটু পানি হওয়ায় লোকজন চৌকি উঁচু করে রাত্রীযাপনসহ রান্না বান্না করছে। প্লাাবিত এলাকার মানুষ গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে।

অষ্টমীরচর ইউনিয়নের চর মুদাফৎকালিকাপুর ও কালিকাপুর এলাকায় ৯০টি, নয়ারহাট ইউনিয়নের খেরুয়ারচর ও ফেইসকা এলাকায় ৬০টি ও চিলমারী ইউনিয়নে ১৫টি বাড়ী মিলে গত ৪দিনে প্রায় ১৬৫টি বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। এছাড়াও শত শত একর আবাদী জমি নদীতে ভেঙ্গে যাচ্ছে। অপরদিকে উপজেলার জোড়গাছ পাকার মাথা এলাকায় নদী ভাঙ্গনের সৃষ্টি হওয়ায় শনিবার বিকাল থেকে মমিনুল ইসলামের গলামালের দোকান,হাসিনুর রহমানের ঔষধ ফার্মেসী, নসু পালের স্বর্নের দোকান ও আকরুজ্জামানের দোকানসহ ৬টি দোকান নদী গর্ভে চলে গেছে। ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে ধীরেন্দ্র নাথের গলামালের দোকানসহ গোটা জোড়গাছ পুরাতন বাজার। রমনা ইউপি চেয়ারম্যান আজগার আলী সরকার বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড অতিদ্রুত জিও ব্যাগ ফেলার কথা জানিয়েছেন।

অষ্টমীরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তালেব জানান, নদী ভাঙ্গন ও বন্যা কবলিত লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। বন্যার্তদের সাহায্যে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। পাউবো জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদে চিলমারী পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৭১ সে.মি. উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি মানুষের মাঝে এখন পর্যন্ত সরকারী কিংবা বে-সরকারীভাবে কোন সাহায্য দেয়া হয়নি। তবে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কোহিনুর রহমান জানান, জেলা ত্রাণ শাখা থেকে চিলমারী উপজেলার পানিবন্দি মানুষের জন্য ৫ মে.টন চাল, ২শ শুকনো খাবারের প্যাকেট ও নগদ ৫০ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা কিছুক্ষণের মধ্যে বিভাজন করা হবে।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার বীরবিক্রম বলেন, গত ৪দিনে উপজেলার অষ্টমীরচর, নয়ারহাট ও চিলমারী ইউনিয়নে প্রায় ১৬৫টি বাড়ী নদীতে ভেঙ্গে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের নয়াবশ, রমনা ইউনিয়নের ভরট্টপাড়া, জোড়গাছ পুরাতন বাজার ও চিলমারী ইউনিয়নের মনতোলা এলাকাসমুহ। বন্যার্তদের জন্য সরকারীভাবে যা বরাদ্দ পাওয়া গেছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তবে সরকারীভাবে ত্রাণ সামগ্রী আসতে শুরু করেছে পর্যায়ক্রমে আসতে থাকবে। বন্যা পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রনের বাইরে যায়নি।

ইতোমধ্যে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় দূর্যোগ মোকাবেলার জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রতিদিনের খবর পড়ুন আপনার ইমেইল থেকে
কুড়িগ্রাম বিভাগের আলোচিত
ওপরে