প্রয়াত মেয়র সাহাদৎ হোসেন সুমনের স্বপ্নের পৌরসভা গড়তে অগ্রনী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন তার সহধর্মিনী বর্তমান মির্জাপুর উপজেলার আওয়ামীলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও পৌর মেয়র সালমা আক্তার শিমুল। স্বাধীনতার পর টাঙ্গাইল জেলার মধ্যে তিনিই প্রথম নারী মেয়র। তার ছোয়ায় রোল মডেল পৌরসভা গঠিত হবে বলে আশার আলো পৌর-বাসির। তিনি এইচএসসি /সমমানের ডিগ্রি অর্জন করেছেন বলে জানা গেছে। তার বাবার বাড়ি টাঙ্গাইলের এলাঙ্গাতে এবং দুই পুত্র সন্তানের জননী তিনি।
গত ১১ই ফেব্রুয়ারী ২০২০ ইং তারিখে তার স্বামী সাহাদৎ হোসেন সুমনের মৃত্যুর পর নির্বাচন কমিশন ৭ সেপ্টেম্বর উপনির্বাচনী তফসীল ঘোষণা করেন। নির্বাচনে অন্য কোন দলীয় প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্ধীতায় মির্জাপুর উপজেলা পৌর-মেয়র নির্বাচিত হন তিনি ।
উপ-নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তার ন্যায়নীতি, সততা, অসহায় গরীব মানুষের প্রতি সদ-আচরন পৌর উন্নয়ন কাজে মুগ্ধ হয়ে উপজেলা আওয়মীলীগের নেতৃবৃন্দগন পৌর এলাকবাসির জরিপে নির্বাচন কমিশন ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপে পৌর-নির্বাচনী তফসীল ঘোষনায় তাকে নৌকা প্রতীকে প্রার্থী সমর্থন করেন।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকা প্রতীক পেয়ে নির্বাচন করে প্রতিদ্বন্ধী বিএনপি সমর্থিত শফিকুল ইসলাম ফরিদকে রেকর্ড় ভঙ্গ বিপুল সংখ্যক ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দ্বিতীয় বারের মত মেয়র নির্বাচিত হন সালমা আক্তার শিমুল। নির্বাচনে ভোটের ফলাফল ছিল নৌকা ১২ হাজার ৪৭৮ ভোট এবং নিকটতম বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ২ হাজার ৯২৪ ভোট।
১১-০৭-২০০০ ইং সালে মির্জাপুর পৌরসভা স্থাপিত হয় । ২০২০-২১ সাল থেকে তিনি দায়িত্বের সাথে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তিনি তার স্বামী সাবেক মেয়র মরহুম সাহাদৎ হোসেন সুমনের স্বপ্নের পৌরসভা কে আধুনিক পৌরসভা হিসাবে রূপান্তর করাতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
পৌরসভার অফিস সূত্রে জানা যায়, তিনি ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য আইইউআইডিপি প্রকল্পের কিছু উন্নয়ন মূলক কাজ সম্পন্ন করেছেন। তারমধ্যে হচ্ছে, ০১নং ওয়ার্ড থেকে ০৮ নং ওয়ার্ডে যে সকল কাজ সম্পন্ন হয়েছে তাহল ডাকবাংলো হতে আলহাজ্ব শফিউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আরসিসি, নাদুর বাড়ি হতে হাতেম টাউন বিসি, মুসলিম পাড়া হতে পাহাড়পুর বিসি, উত্তম ঘোষের বাড়ি হতে আরপি সাহার বাড়ি পর্যন্ত আরসিসি, বাহিমহাটি পালপাড়া থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল বাইপাস ভায়া মহিলা কলেজ, সাবেক এমপির বাড়ি হতে মেইন রোড পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা নির্মাণ সহ গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করেছেন।
এছাড়া পৌরসভার ১-৯ নং ওয়ার্ডে ঢাকা- টাঙ্গাইল পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে কুমুদিনী হাসপাতাল পর্যন্ত ফুটপাতসহ আরসিসি রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ, পৌর ভবন হতে মির্জাপুর সরকারি কলেজ ব্রীজ ও মহিলা কলেজ ব্রীজ পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ, বাওয়ার রোড মোড় হতে থানা মোড় পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ, টেকনিক্যাল কলেজ হতে পৌর শেষ সীমানা পর্যন্ত আরসিস, মরহুম কাচ্ছেদ চেয়ারম্যানের বাড়ি হতে খালপাড় রাস্তা বিসি, থানা মোড় হতে কাকুলির মোড়, চুনিলাল সাহার গোডাউন পর্যন্ত আরসিসি, রফের মার্কেট হতে বুড়ি হাটি, লেবু বাগান হতে হাতেম টাউন সেখান থেকে দুলালের বাড়ি পর্যন্ত চেইনেজ টু- ভেন্ট ( সাইজ ৩.৫০ গুন ৩.৫০ মি.) বক্স কালভার্ট নির্মাণ, আন্ধরা থেকে মাঝিপাড়া আরসিসি/ বিসি রাস্তা নির্মাণসহ আরও উন্নয়নমূলক কাজ চলমান রয়েছে।
পৌরসভার ৭,৮,৯নং ওয়ার্ড পাহাড়পুর মসজিদ হতে হেলালের বাড়ি ও সরিষাদাইড় পাকা রাস্তা হতে সরকারি প্রাথমিক পর্যন্ত ওয়ালসহ আরসিসি রাস্তা নির্মাণ, আন্ধরা পুরাতন ব্রীজ হতে কুতুববাজার, কুতুববাজার থেকে আন্ধরা রসিক ভবন পর্যন্ত বিসি, বাবু বাজার রনদা নাট মন্দির হতে আন্ধরা খাল পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা ও ড্রেন, কান্ঠালিয়া নয়নের বাড়ি হতে বুড়িহাটি, শ্রীহরি পাড়া হতে জহিরের বাড়ি পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা নির্মাণ হবে বিষয়টি ৭,৮,৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরগন নিশ্চিত করেন। এছাড়াও এমজি,এসপি প্রকল্পের প্রায় অর্ধশত প্রকল্পের কাজ প্রস্তাবিত রয়েছে।
এ বিষয়ে মির্জাপুর পৌর মেয়র সালমা আক্তার শিমুল বলেন, আগের মেয়র মহোদয়গণ ছোটখাট অনেক কাজ করেছেন। আমার স্বামী প্রয়াত মেয়র শাহাদাত হোসেন সুমনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে মির্জাপুর বাসীর আশা পূরনে গরীব অসহায়দের পাশে থেকে একটি আধুনিক পৌরসভা হিসাবে রুপান্তর করতে চাই। আমি মেয়রের দায়িত্ব পেয়ে পৌর এলাকার অনেক রাস্তা পাকাকরনসহ ড্রেনেজের কাজ সম্পন্ন করেছি। বর্তমানে অনেক রাস্তা পাকাকরনসহ ড্রেনেজের কাজ চলমান রয়েছে। অসম্পন্ন রাস্তাগুলি অল্প সময়ের মধ্যে টেন্ডারের মাধ্যমে সমাপ্ত করতে পারব বলে আশা করি।
তিনি আরও বলেন, বর্জ্য ও যানজট মির্জাপুরে একটি প্রধান সমস্যা। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও যানজট নিরসনে সকলের সহযোগীতা ছাড়া এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব না। মির্জাপুরে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্লাস্টিকের ডাস্টবিন ও নির্দিষ্ট স্থানে বড় আকারে ময়লা আবর্জনা স্তুপ রাখার ব্যবস্থা আছে এবং পৌরসভার গাড়ীর মাধ্যমে তা অপসারণ করা হয়। আমাদের কাউন্সিলরগনদেরে সাথে আলোচনা করে বর্জ্য ব্যবস্থার উন্নতির জন্য ডাম্পিং ব্যবস্থা করব।
বহিরাগত অটোরিকশা মির্জাপুর বাজারে ভরে গেছে। চাহিদার তুলনায় অটোরিকশা অনেক বেশী চলাচল করায় মির্জাপুর শহরের প্রধান রাস্তাগুলো প্রায় জ্যাম লেগে থাকে। যানজট নিরসনে লাইসেন্স বিহীন অটোরিকশা জব্দ করা হয়। যাদের লাইসেন্স নাই তাদের নতুন করে লাইসেন্স করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হচ্ছে। আমাদের একটা নির্দিষ্ট হিসাব অনুযায়ী অটোরিকশা মির্জাপুর বাজারে চলাচল আছে। বহিরাগত এবং লাইসেন্স বিহীন অটোরিকশা বিরদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে যানজট নিরসন সম্ভব হবে বলে আশা করি।