আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আবারও দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন সরকারপ্রধানের। টানা তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হলে এটাও হবে স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি রেকর্ড।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গতকাল রবিবার জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশ নিলেও শরিকদের ছাড়াই তারা দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। টানা তৃতীয়বারের মতো এই জয় পেয়েছে দেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী ঐতিহ্যবাহী এই দলটি।
৩০০ আসনের মধ্যে গতকাল রবিবার ২৯৯টি সংসদীয় আসনে ভোট গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে একটির ফল স্থগিত করে ২৯৮টি আসনের ফল ঘোষণা করা হয়।
আজ সোমবার ভোর সাড়ে চারটায় ইসির সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২৫৯ আসন। এছাড়া, লাঙ্গল প্রতীকে জাপা ২০, বিএনপি ৫, গণফোরাম ২, ওয়ার্কার্স পার্টি ৩, জাসদ ২, স্বতন্ত্র ৩, তরিকত ফেডারেশন ১, বিকল্পধারা ২ ও জেপি (মঞ্জু) ১টি আসন পেয়েছে।
এবারও সংসদে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি। এবার দলটি ২০ আসন পাওয়ায় আগামীতে সংসদের প্রধান বিরোধীদল হতে যাচ্ছে।
গোপালগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই লাখ ২৯ হাজার ৫৩৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির এস এম জিলানী পেয়েছেন মাত্র ১২৩ ভোট।
বিএনপির জয়ীরা হলেন- ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে জাহিদুর রহমান, বগুড়া-৪ আসনে মোশাররফ হোসেন, বগুড়া-৬ আসনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আমিনুল ইসলাম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে হারুনুর রশিদ। সিলেট-২ আসনে গণফোরামের মোকাব্বির খান ও মৌলভীবাজার-২ আসনে একই দলের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর জয়ী হয়েছেন।
এবারের নির্বাচনে ভোটার ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন। অসমর্থিত সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনে সাত কোটি ৯৯ লাখ ১৮ হাজার ৮১৮ জন ভোট দিয়েছেন। এ হিসাবে ৭৬ শতাংশেরও বেশি ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। আওয়ামী লীগ পেয়েছে ৭৭ দশমিক ১২ শতাংশ ভোট। বিএনপি পেয়েছে ১২ দশমিক ২৮ ভোট। জাতীয় পার্টি পেয়েছে ৫ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ ভোট। ভোটপ্রাপ্তিতেও রেকর্ড করেছে আওয়ামী লীগ। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে ৭৩ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়ে ২৯৩ আসন পেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন দলটি।
রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সারাদেশের ২৯৯টি সংসদীয় আসনে ৪০ হাজারের বেশি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হয়।
নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ৩৯টি দলই এবারের নির্বাচনে অংশ নেয়। দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে প্রার্থীসংখ্যা ছিল এক হাজার ৮৬১।