মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম, পঞ্চগড় :: পঞ্চগড় জেলাধীন তেঁতুলিয়া উপজেলায় পঞ্চগড় মা’দকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন প্রেমচরণজোত সীমান্তের নুজিমুদ্দিন লিটন মিয়ার বসতবাড়ি থেকে তার স্ত্রী ঝর্ণা বেগম (২৭) কে ১৬ সেপ্টেম্বর/১৯ সোমবার দুপুরে পি’স্তলসহ (ওয়ান সুটার গান) গ্রে’ফতার করেন । ঝর্ণার সাথে তার এক বছরের মেয়ে মাসুমা আক্তারকেও নিয়ে যায় তারা। মা’দকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আব্দুল মান্নান লিটন মিয়া ও তার স্ত্রী ঝর্ণা বেগমকে আসামি করে তেঁতুলিয়া থানায় অ’স্ত্র আইন ১৯৭৮-এর ১ (ক) ধারায় একটি মা’মলা দায়ের করেন। ওঁই মা’মলায় ঝর্ণাকে তার শিশু সস্তানসহ মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। আসামি না হয়েও মায়ের সাথে কারাবাসে থাকতে হবে শিশু মাসুমাকেও। যতদিন না তার মায়ের জামিন হচ্ছে ততদিন কা’রাগারের মধ্যে কাটাতে হবে শিশুটিকে।
এদিকে ঝর্ণার পরিবার দাবি করেছে মা’দক ধরতে এসে মা’দক না পেয়ে লিটনের স্ত্রী ঝর্ণাকে অ’স্ত্র দিয়ে ফাঁ’সিয়ে দিয়েছে মা’দকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এই অ’ভিযোগে তারা জেলা প্রশাসক ও মা’দকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অ’ভিযোগ করেন।
ঝর্ণাকে গ্রে’প্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করায় তার ছোট সন্তানদের নিয়ে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন তার পরিবার। তার তিনটি মেয়ে সস্তান। তিন জনই ছোট। বড় মেয়ে লামিয়া আক্তারের বয়স সাত বছর, তার ছোট লাবিবা আক্তারের বয়স চার বছর আর সবার ছোট মাসুমা আক্তারের বয়স এক বছর। ছোট মেয়ে মাসুমাকে সাথে নিয়ে যেতে পারলেও বাকি দুজনকে রেখে যেতে হয়েছে। মায়ের খোঁজে প্রতিনিয়ত কান্না করছে অবুঝ শিশু দুটি।
ঝর্ণার স্বামী লিটন মিয়া বলেন, আমি যদি কোন অ’পরাধ করে থাকি। আমার কাছে যদি তারা কোন মা’দক পেতো তাহলে আমাকে নিয়ে যেতো। কিন্তু মা’দক ধরতে এসে মা’দক না পেয়ে তারা আমার নিরাপরাধ স্ত্রীকে অ’স্ত্র দিয়ে ফাঁ’সিয়ে গ্রে’প্তার করে নিয়ে গেছে। বিনা দোষে আমার ছোট মেয়েটিকেও জেল থাকতে হবে। বড় দুটি মেয়ে সব সময় মায়ের জন্য কান্না করছে। বিনা দোষে কেন পরিবারের ওপর এমন নি’র্যাতন করা হচ্ছে। কোন দোষে আমার সন্তানদের এই শাস্তি দেয়া হচ্ছে। আমি নিরপেক্ষ ত’দন্ত করে এ ঘটনায় জড়িতদের দৃ’ষ্টান্তমূ’লক শাস্তির দাবি করছি।
লিটনের বড় ভাই মানিক মিয়া বলেন, লিটন এক সময় নে’শা করতো। এখন যদি তার কাছে নে’শা পেতো তাহলে তাকে প্রে’ফতার করলে আমাদের কোন আপত্তি ছিল না। কিন্তু তার স্ত্রীকে কেন প্রে’ফতার করা হলো। তারা বলছে তার কাছে অ’স্ত্র পাওয়া গেছে। একটা গৃহবধূর কাছে এমন অ’স্ত্র থাকবে এটা কেও বিশ্বাস করতে পারে। মূলত তারা মা’দক ধরতে না পেরে ক্ষু’ব্ধ হয়ে তারাই পি’স্তল দিয়ে ফাঁ’সিয়ে দিয়েছে। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তারা যেন সুষ্ঠু তদন্ত করে আসল দোষিদের খুঁজে বের করে।
পঞ্চগড় মা’দক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শন কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, আমরা মা’দকের অ’ভিযানে গিয়ে ত’ল্লাশী করে ঝর্ণা বেগমের কোমড়ে পি’স্তল (ওয়ান সুটার গান) পাই। পরে তাকে প্রে’ফতার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। আমরা লিটন ও তার স্ত্রী ঝর্ণার নামে অ’স্ত্র আইনে মা’মলা করেছি। তার মেয়ে মাসুমার বয়স এক বছর হওয়ায় তার মায়ের হেজাফতে তাকে রাখা হয়। মা’মলার এজাহারে আমরা তাই উল্লেখ করেছি।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, অ’স্ত্রসহ ওই নারীকে প্রে’ফতার করে মা’দকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন আমাদের কাছে সো’পর্দ করে। ওই নারীর সাথে আসামি ঝর্নার শিশু সন্তানকেও তারা নিয়ে এসেছেন। ছোট শিশু মা ছাড়া থাকতে পারবে না তাই তাকে মায়ের হেফজতে রাখা হয়েছে। বিষয়টি অমানবিক হলেও কিছুই করার নেই।
‘বিদ্রঃ সমকালনিউজ২৪.কম একটি স্বাধীন অনলাইন পত্রিকা। সমকালনিউজ২৪.কম এর সাথে দৈনিক সমকাল এর কোন সম্পর্ক নেই।’