জিএম মিজান,বগুড়া প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা শহরের গাজীর মোড় এলাকায় সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে স্বর্ণের দোকান খোলা রাখায় দোকানের কারিগরকে জরিমানা করে তোপের মুখে পরেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন।
এ সময় উত্তেজিত জনগণের তোপের মুখে গাড়িতে অবস্থান নেয় ইউএনও। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শনিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, উপজেলা শহরের গাজীর মোড় এলাকায় স্বর্ণের দোকানের কারিগর ফেরদৌস একটি নাকের ফুল জোড়া দেয়ার অর্ডার পেয়ে দোকানের অর্ধেক সাটার খুলে কাজ করছিলেন। এমন সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসে মুখে মাস্ক না থাকায় ফেরদৌসকে দেড় হাজার টাকা জরিমানা করেন। ফেরদৌসের স্ত্রী তাৎক্ষনিকভাবে ধার-দেনা করে এক হাজার টাকা জোগার করে এনে দেয়। কিন্তু বাকি ৫০০ টাকা না দিতে পারায় ফেরদৌসকে উপজেলা ভূমি সহকারী কর্মকর্তার গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া চেষ্টা করা হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ফেরদৌসকে ছেড়ে দেয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করে কাজ না হওয়ায় জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে ইউএনওর গাড়ি ঘেরাও করে ও হৈ-চৈ শুরু করে। বিষয়টি সামাল দিতে না পেরে ইউএনও গাড়িতে অবস্থান নিয়ে পুলিশে খবর দেয়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয়রা বলেন শহরের বড়-বড় কাপরের দোকানগুলো ও অন্যান্য পন্যসামগ্রীর দোকান খোলা থাকলেও সেগুলোতে প্রশাসনে কোন নজর নেই, নজর শুধু ছোট-ছোট দোকানগুলোর ওপর।
জরিমানার বিষয়ে স্বর্ণের কারিগর ফেরদৌস বলেন, খাওয়ার মত কোন টাকা পয়সা বাড়ীতে নেই। একজন নাকের ফুল মেরামত করার জন্য ১০০ টাকা দিতে চেয়েছিলেন। এ জন্য দোকানের একটা সাটার খুলে কাজ করছিলাম। এই মূহুর্তে ইউএনও এসে প্রথমে মাস্ক নেই জানতে চায়। টেবিল থেকে মাস্ক বের করে দেখালেও তার সাথে থাকা একজন ব্যক্তিকে ১৫০০ টাকা জরিমানা ও ১৫ দিনের জেল দিতে বলেন। তাৎক্ষনিক আমার স্ত্রী জানতে পেরে ধার করে ১হাজার টাকা জোগার করে দিলেও বাকি ৫০০ টাকা নিতে ও ১৫ দিনের জেল দিতে আমায় গাড়িতে উঠায়। স্বানীয়রা আমাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও ইউএনও ম্যাডাম আমার কোন কথাই শোনেননি। তখন লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
সোনাতলা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রেজাউল করিম এ প্রতিবেদক-কে বলেন, উপজেলার গাজীর মোড় স্থানীয় লোকজন উত্তেজনা সৃষ্টি করছে এমন খবর পেয়ে দ্রুত আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহোদয় তার গাড়িতে বসে ছিলেন। পরে লোকজনের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।