বরগুনায় ডক্টরস কেয়ার ক্লিনিকের অপচিকিৎসার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার ও সাধারন জনগন।
মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে বরগুনা ডক্টরস কেয়ার ক্লিনিকের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় ভুক্তভোগী পরিবার জানান, গত ১৬ই আগস্ট সন্তানসম্ভবা গৃহবধূ মোসাঃ রিমার ছিল প্রসববেদনা শুরু হলে দ্রুত চিকিৎসা সেবা পাওয়ার জন্য বেসরকারি ক্লিনিক বরগুনা ডক্টরস কেয়ার ক্লিনিকে নিয়ে যায় রিমাকে। ক্লিনিকের কর্তব্যরত ডাক্তার আঃ খালেক রোগীকে রিমাকে দেখে দ্রুত ডক্টরস কেয়ার ক্লিনিকে ভর্তি করাতে বলেন । তারপর রিমাকে বরগুনা ডক্টরস কেয়ার ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। ভর্তির পর ডাঃ খালেক রোগীকে পরীক্ষা করে বলেন রোগীর অবস্হা সংকটাপন্ন, বাচ্চাকে বাঁচাতে হলে দ্রুত সিজার করতে হবে।
একপর্যায়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সিজার অপারেশন ফি সহ অন্যান্য ফি জমা দেয়ার পর ডাঃ আঃ খালেক রিমার অপারেশন করেন এবং এক কন্যাশিশু জন্ম দেয় রিমা। পরে রোগী সুস্থ হওয়ার পর ২০ আগস্ট ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ মা ও নবজাতকে ছাড়পত্র দেয়।
তারা আরোও জানান, বাড়িতে যাওয়ার ২/১ দিন পরেই রিমার অপারেশনের সেলাইতে অসহনীয় ব্যাথা সহ শারীরিক নানা সমস্যা দেখা দিলে পুনরায় ডাঃ মোঃ আঃ খালেকের কাছে যায় । ডাঃ খালেক কিছু টেস্ট দেয়, এবং রির্পোট দেখে তিনি বলেন এটি অপারেশন পরবর্তী স্বাভাবিক সমস্যা চিন্তার কোন কারন নেই।
এরপরও রোগীর কোন উন্নতি না হলে পুনরায় আবার ডাঃ আঃ খালেকের কাছে গেলে তিনি রোগীকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বলেন, হয়তো অন্য কোন অসুখ, অপারেশনের কারনে রোগীর অবস্হা এমন হয় নি।
কিন্তু রোগীর অবস্হা দিন দিন সংকটাপন্ন হওয়ায় রোগীকে গত ২৯ শে সেপ্টেম্বর বরিশালের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নিয়ে যায় স্বজনরা। সেখানকার ডাক্তার রোগীকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রিপোর্ট দেখে বলেন রোগীর পেটে কিছু একটা রয়েছে, বের করতে হলে অপারেশন করতে হবে।
রোগীর এমন অবস্হার কথা বরগুনা ডক্টরস কেয়ার ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা রিমাকে যে সিজার অপারেশন করেছেন তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। বরিশালের ডাক্তার রোগীকে অপারেশনের উদ্দেশ্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন সেখানে অপারেশনের সিরিয়াল পেতে বিলম্ব হওয়ায় রোগীকে বরিশালের মমতা স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করালে সেখানে রোগীর অপারেশন সম্পন্ন করেন।
রিমার পরিবার বলেন, অপারেশন শেষে ডাক্তার সাহেব আমাদের বলেন ও দেখান ভিতর থেকে মেডিকেল গজ কাপড় পাওয়া গেছে। যা রোগীর সিজার অপারেশনের সময় ডাঃ খালেক রোগীর পেটে রেখেই সেলাই করেছিলেন। ডাঃ আঃ খালেক সাহেব কর্তৃক এমন অপ চিকিৎসা ও অবহেলার ফলে রিমা আজীবনের মত শারিরীক যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তা আর পূরনীয় নয়।
সবশেষ রিমার পরিবার বলেন, অপারেশনের সময় পেটে গজ কাপড় রেখে সেলাই করা ও পরবর্তীতে তা বুঝতে পেরেও রোগী ও তার আত্মীয়েদের কাছে প্রকাশ না করা সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃত অবহেলা। আমরা এই অপরাধের বিচার চাই, যাতে আর কোন সাধারন অসহায় মানুষ এমন অপচিকিৎসার স্বীকার না হন।