বাজারে হু-হু করে বাড়ছে আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী অতিথি আপ্যায়নের অন্যতম উপাদান পানের দাম। ফলে উৎপাদনকারী ব্যবসায়ী ক্রেতা বিক্রেতাসহ নাভীশ্বাস উঠেছে পান পিয়াসীদের। সবজিতে কিছুটা স্বস্তি হলেও কমেনি চালের দাম, সেই সাথে এখন দামের উর্দ্ধমূখী হয়ে বাজার কাপাচ্ছে পান।
একটু হিসাব করলেই দেখা যাবে দেশের এক তৃতীয়াংশ লোকই পান খেয়ে থাকে বিশেষ করে পরিবারের বাবা মা ও বয়স্ক দাদা দাদি, নানা-নানি মুরোব্বিরা। নিম্ন আয়ের মানুষসহ সব শ্রেণি পেশার মানুষই পান খেয়ে শরীর মনের খুধা মেটাই। কিন্তু পানের বাজারে দামের এই অস্থিতিশীলতার কারণে একরম চাপা কষ্টের মধ্যেই আছে পানের সাথে জড়িত মানুষেরা।
বিভিন্ন ছোট বড় হাট-বাজার ঘুরে জানা যায়, পানের দাম কয়েকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। গত সপ্তাহে যে পানের পন প্রতি ৮০-১শ টাকা ছিল তা বর্তমানে দেড়’শ থেকে দুই’শ টাকা এবং খিলি পান যা গত সপ্তাহে ২শ ৩০ টাকা ছিল তা বর্তমানে ২শ ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রচন্ড শীতে উপজেলার পান চাষীদের পানের বরজগুলোর পান অকালে ঝড়ে পড়ায় এবং গাছে নতুন করে পান না ধরায় স্থানীয় বাজারে পানের সরবরাহ কমে গেছে। দীর্ঘদিন যাবত পান ব্যবসায়ের সাথে জড়িতরা এবছর ব্যাপক লোকশানের সম্মুক্ষীণ হচ্ছেন।
পান ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম জানান, গত সপ্তাহে মোকাম থেকে পান কিনে এনে তাদের আট-নয় জন ব্যবসায়ী প্রত্যেকে অনেক টাকা করে লোকশান দিয়েছেন। পানগুলো ঝরে পড়া ছিল তারা আগে বুঝতে পারেনি। বর্তমানে মোকামেই পানের কিছুটা আকাল চলছে। মোকাম থেকে বেশি দরে কিনতে হচ্ছে। মোকামে দাম বাড়তি হওয়ায় তার সাথে পরিবহন ও অন্যান্যা খরচ যোগ করলে দেখা যাচ্ছে যেন পান নয় সোনা কিনছি।
পান কিনতে আসা বয়স্ক মুরোব্বি আব্দুল লতিফ চাচা বলেন, চল্লিশ বছর ধরে পান খাই এখন প্রতিদিন বিশ খিলি করে পান খায় কিন্তু বর্তমানে পানের যে দাম তাতে করে তিন থেকে চারটা পানও খাওয়াই মুশকিল হয়ে পড়েছে। পানের বাজারে আসতেই ভয় পাচ্ছি। চাহিদা মত পান না খেতে পেরে শাররীক ও মানষিক ভাবে ব্যাপক কষ্টে আছি।
বাজারের খুচরা পান বিক্রেতা আলমগীর হোসেন জানান, বেশি দামে কিনতে হয় বলেই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। পানের উৎপাদনে ব্যহত হওয়ায় পান সরবরাহ কম হচ্ছে এজন্য দাম বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান অবস্থাতে পান ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারণ সবাই নতুন এক নাজেহাল অবস্থার মধ্যে পড়েছি। ব্যবসায়ীরা আরো বলেন, আগামী চৈত্র মাস পর্যন্ত পানের দাম আকাশ ছোঁয়া থাকবে দিন দিন বাড়বে ছাড়া কোমার কোন সম্ভাবনা নেই। পানের দাম কমতে হলে বৃষ্টি হতে হবে, শীত চলে যেতে হবে তাহলে গাচে আবারও পান ধরবে এবং পর্যাপ্ত পান উৎপাদন হলেই ধীরে ধীরে পানের দাম কমতে থাকবে।