“বরগুনার আমতলী পৌর শহরের খোন্তাকাটা এলাকায় বেগম নূরজাহান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বৃষ্টি এলেই বাজে ছুটির ঘন্টা। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ অবস্থায় বিদ্যালয়টির পাঠদান চললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিচ্ছেন না কোন পদক্ষেপ।
২০০৮ সালে বেগম নূরজাহান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হওয়ার পর স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় একটি নিচু জমিতে টিন সেটের ঘর তুলে বিদ্যালয়টি পাঠদান চালিয়ে আসছে। ২০১৭ সালে আকর্ষিক ঘূর্ণিঝড়ে টিন সেটের ঘরটি বিধ্বস্থ হয়। ঐ সময় স্থানীয়রা আবারও সহযোগিতা করে টিন সেটের ঘরটি মেরামত করে পাঠদান অব্যাহত রাখে।
বর্তমানে ঐ জরাজীর্ন ঘরটিতে গত তিন বছর ধরে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। বৃষ্টি এলেই স্কুল ঘরটির চালা দিয়ে পানি পড়ে ও নিচু জমিতে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে শ্রেণী কক্ষ তলিয়ে যায়। বাধ্য হয়ে তখন বিদ্যালয়টি ছুটি দিয়ে দিতে হয়। এতে ব্যহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের পাঠদান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, ২০০৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলেও সরকারী হয় ২০১৩ সালে। বর্তমানে প্রায় ১৫১ জন ছাত্র-ছাত্রী বিদ্যালয়টিতে অধ্যয়ন করছে। বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে নেই কোন রাস্তা। চারদিকে পানিতে থৈ-থৈ করছে।
কাঁদা ও হাটু পানি ডিঙ্গিয়ে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে হয়। শ্রেনী কক্ষের চেয়ার টেবিল ও বেঞ্চগুলো পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। পাঠদান করানোর মত কোন পরিবেশ নেই। গাদাগাদি করে ছোট ছোট ক্লাশ রুমে শিক্ষার্থীদের ক্লাশ করতে হচ্ছে। এমনকি বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের বাথরুমে যেতেও পানি ডিঙ্গিয়ে যেতে হয়।
বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানালেও তারা বিদ্যালয়ের ঘরটি সংস্কার বা মেরামত করার কোন উদ্যোগ আজ পর্যন্ত গ্রহন করেনি।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিম, আসলাম, তানভীর, লামিয়া, মেহেদী, সুমাইয়া, সারা বলেন, বৃষ্টি এলেই টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে আমাদের বই খাতা ভিজে যায়। বেশী বৃষ্টি হলে আমাদের শ্রেণী কক্ষের মধ্যে পানি জমে যায়। তখন স্যারেরা আমাদের স্কুল ছুটি দিয়ে দেন।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও জমিদাতা প্রকৌশলী মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, দ্রত বিদ্যালয়টিতে একটি ভবন নির্মান করে এ সমস্যার সমাধান করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসাঃ নাসরিন সুলতানা বলেন, গত তিন বছর ধরে রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে এ জরাজীর্ন স্কুল ঘরে পাঠদান করে যাচ্ছি। স্কুল ঘরটি নিচু জমিতে নির্মান হওয়ায় একটু বৃষ্টি হলেই চারপাশে পানি জমে শ্রেণী কক্ষ তলিয়ে যায়। তখন আর ক্লাশ করার মত কোন পরিবেশ থাকেনা। বাধ্য হয়ে বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে দিতে হয়।
বিষয়টি একাধিকবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জানালেও অদ্যবদি তারা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। তিনি এ সমস্যা সমাধানে দ্রত একটি ভবন নির্মানের দাবী জানান।
আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মজিবুর রহমান বলেন, বর্তমানে এ বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যহত হচ্ছে। ভবন নির্মান করা খুবই জরুরী। বিদ্যালয়ে পাঠদান উপযোগী করার জন্য বরাদ্দ চেয়ে অধিদপ্তরে পত্র পাঠিয়েছি। বারাদ্দ পেলে দ্রত সময়ের মধ্যে স্কুল ঘরটি সংস্কার করা হবে।