বগুড়া শহরে পালসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তিনদিন ধরে পরে থাকা কঙ্কাল প্রায় নাসির মন্ডল (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে জীবন বাচিয়াছে পুলিশ। নাসির মন্ডল শহরের মধ্যে পালসা (মন্ডল পাড়া) গ্রামের মৃত মোসলেম উদ্দিনের পুত্র।
শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টায় তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে।
স্থানীয়রা নাসিরকে মৃত ভেবে খাটিয়া এনে ৩ঘন্টা ধরে দাফনের প্রস্তুতি নিতে থাকে। তবে ৯৯৯ এ খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে জীবিত পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়। উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রহিম রানা এ প্রতিবেদক-কে বলেন, এক সময় নাসির অনেক টাকা পয়সা ও সম্পত্তির মালিক ছিলেন। কিন্তু কালের বিবত্তনে বিভিন্ন কারণে তার শহরে থাকা প্রায় আড়াই বিঘা জমি বিক্রি করে ফেলে। একারণে প্রায় ৬মাস আগে তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়।
সম্পত্তি ও টাকা পয়সা না থাকায় তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়, স্ত্রী চলে যাওয়ার মান অভিমান ও শোকে নাসির সম্প‚র্ণ ভাবে খাওয়া দেওয়া বন্ধ করে দেয়। শুধু মাত্র ফলের জুস খেয়ে তিনি জীবন ধারণ করতো। একপর্যায়ে নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে নাসির স্থানীয় এক গ্যারেজে বসবাস শুরু করেন। সেখান থেকে তিনদিন আগে তিনি পালসা প্রাইমারি সরকারি স্কুল মাঠে এসে থাকা শুরু করেন। প্রতিবেশিরা তাকে খাওয়ানো চেষ্টা করলেও তিনি খাবার গ্রহণ করেননি।
শুক্রবার এশার নামাজ পরে তার বোন জামাই সাইদুল মন্ডল তাকে দেখতে আসলে দেখে তার কোন নড়াচড়া নেই। পরে স্থানীয়রা তাকে মৃত ভেবে খাটিয়া এনে ধর্মীর রীতিমতো দাফনের কাজের প্রস্তুতি নেয়। এসময় স্থানীয় এক যুবক ৯৯৯ এ কল করে আমাদের জানায়। পরে আমরা এসে দেখি নাসিরে চোখ খোলা ও কঙ্কাল প্রায় শরীর প্রাথমিক কিছু পরীক্ষা করে বুঝতে পারি তিনি বেঁচে আছেন।
তাৎক্ষণিকভাবে আমরা তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি খুব কষ্টকর যে ৩ঘন্টায় মানুষটিকে শত শত উৎসুক জনতার মাঝে কেউ যাচাই করে দেখেনি সে বেঁচে আছে কিনা। আমরা না আসলে হয়তো তাকে মৃত ভেবে জীবিত দাফন করত। ম‚লত ৬ মাস সে কোনরকম খাবার না খাওয়ায় এই অবস্থা হয়েছে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সপার (সদর সার্কেল ও মিডিয়া মুখপাত্র) ফয়সাল মাহমুদ এ প্রতিবেদক-কে বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। একজন জীবিত মানুষকে ৩ ঘন্টা ধরে মৃত ভেবে ফেলে রাখা হয়েছিল। পরে আমরা ঘটনাটি জানতে পেরে দ্রæত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।