২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

samakalnew24
samakalnew24
শিরোনাম:
বকশীগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রারকে হত্যার হুমকি, ২২ জনের নামে... ফেইসবুকের প্রেমের টানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যুবক... কালাইয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত বরগুনায় ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস পালিত র‌্যাবের অভিযানে ট্যাপেন্টাডলসহ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক

মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেল আমতলীর মাহেন্দ্র চালকের মেয়ে “কনা”

  সমকালনিউজ২৪

হায়াতুজ্জামান মিরাজ, আমতলী ::

বরগুনার আমতলী পৌর শহরের ২নং ওয়ার্ড মহিলা কলেজ রোড বাসিন্ধা মাহেন্দ্রা গাড়ী চালক খবির হোসেন হাওলাদারের মেয়ে সামসুন নাহার কনা দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

পরিবার সূত্রে জানাগেছে, মাহেন্দ্রা গাড়ী চালক খবির হোসেন হাওলাদারের কন্যা সামসুন নাহার কনা অসাধারণ মেধাবী একজন শিক্ষার্থী। কনা আমতলী একে হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাইমারী সমাপনী পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে আমতলী সরকারী একে হাই স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হন। এই বিদ্যালয় থেকেই জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। তারপর ৯ম শ্রেণীতে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হতে গেলে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বাবার আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে কনাকে বিজ্ঞান বিভাগ না নেওয়ার জন্য বলেন। কিনতু জেদী কনা বিজ্ঞান বিভাগ ছাড়া বিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন না বলে জানান। বাধ্যহয়ে বাবা কবির হাওলাদার মেয়ে কনা’কে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি করেন এবং এসএসসি পরীক্ষায় সরকারী একে হাই স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উর্ত্তীন হন। এরই ধারাবাহিকতায় কলেজে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রেও কনার জেদ ঢাকায় পড়বেন। সুযোগও পেল হলিক্রস, বিএফ শাহিন স্কুল এন্ড কলেজে। আর্থিক দৈণ্যতার কারনে ভর্তি প্রায় অনিশ্চিত হলেও আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু বান্ধবদের সহযোগিতা নিয়ে তুলনামূলক কম খরচে পড়ার জন্য বিএফ শাহিন স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি হলেন। এখান থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাশ করে যথারীতি মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

ছোট থেকেই কনা’র স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। সেই ইচ্ছা আজ তার হাতের নাগালে হলেও কিন্তু মাহেন্দ্রা গাড়ী চালক বাবার আর্থিক অবস্থা তেমন ভাল নয়। প্রত্যেকটা সফলতা কনা’কে দুশ্চিন্তা এবং অনিশ্চিয়তায় মধ্যে ফেলে দেয় এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। আগামী ২৪ অক্টোবরের মধ্যে তাকে ৪০ হাজার টাকা যোগার করতে হবে মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার জন্য। এত সল্প সময়ে তার বাবার পক্ষে এতগুলো টাকা ম্যানেজ করা খুবই কষ্টকর। আর প্রয়োজনীয় টাকা ম্যানেজ না হলে অনিশ্চিত হয়ে পরবে কনা’র মেডিকেলে ভর্তি।

কনা’র বাবা মাহেন্দ্রা গাড়ী চালক খবির হোসেন হাওলাদার আনন্দঅশ্রু কন্ঠে বলেন, আমি আমার মেয়ের জেদের কাছে সব সময় হেরে গেছি। আমার মেয়ে যখন বুঝতে শিখেছে তখন থেকেই তার একটাই স্বপ্ন সে বড় হয়ে ডাক্তার হবে। আজ আমার মেয়ের সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে। মেয়ের সাফল্যে আমার বুকটা গর্বে ভরে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমার সর্বস্ব বিক্রি করে হলেও আমি আমার মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করবো।

সামসুন নাহার কনা জানান, আমি ছোট বয়সে একবার অসুস্থ্য হয়ে আমার পরিবারের সাথে হাসপাতালে গিয়ে একজন নারী চিকিৎসককে দেখতে পাই। তাকে দেখে আমি বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখি। আল্লাহর ইচ্ছায় আজ আমার সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে। আমার গরীব বাবা আমাকে সব সময় সাপোর্ট দিয়েছে। আমি যা বলেছি আমার বাবা-মা তা পূরণ করার চেষ্টা করেছে। আমি যেন ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে পারি আল্লাহর কাছে এ প্রার্থনা করছি।

 

 

‘বিদ্রঃ সমকালনিউজ২৪.কম একটি স্বাধীন অনলাইন পত্রিকা। সমকালনিউজ২৪.কম এর সাথে দৈনিক সমকাল এর কোন সম্পর্ক নেই।

প্রতিদিনের খবর পড়ুন আপনার ইমেইল থেকে
বরগুনা বিভাগের আলোচিত
ওপরে