২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

samakalnew24
samakalnew24
শিরোনাম:
ফরিদগঞ্জের প্রখ্যাত হোমিও ডাক্তার নারায়ণ চক্রবর্তীর... তাহেরপুরের তিনশত বছরের বৃক্ষের নাম আজো অজানা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রাণিসম্পদের বিকল্প নেই : ইউএনও... প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী সড়ক দুর্ঘটনায় সংগীতশিল্পী পাগল হাসান সহ নিহিত-২ আহত-৩

যমুনা ও ধলেশ্বরীর শাখা নদী বংশাই-লৌহজং নদীতে ব্যাপক ভাঙ্গন, বিপাকে এলাকাবাসি দুর্ভোগ চরমে

 মো. মোজাম্মেল হক, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ সমকালনিউজ২৪

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে যমুনা ও ধলেশ্বরীল শাখার বংশাই-লৌহজং নদীতে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। তীব্র নদী ভাঙ্গনে রাস্তাঘাট, ব্রিজ কালভার্ট, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, হাট বাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা বিলিন হয়েছে। নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ্য কয়েক হাজার পরিবার দিশেহারা হয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

মির্জাপুর উপজেলার বংশাই ও লৌহজং নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবারগুলোর দুর্ভোগের চিত্র। পৌরসভার মহিলা কাউন্সিলল রওশনারা বেগম জানান, আমাদের পৌরসভার বংশাই নদীতে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়। এ বছর ভাঙ্গনের মাত্রা ব্যাপক আকার ধারন করছে। বংশাই ও লৌহজং নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে পেীরসভার একাব্বর হোসেন এমপি সেতু হুমকির মুখে। সেতুর পূর্বপাশে ঘরবাড়িগুলো নদী ভাঙ্গনের ফলে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে ভূক্তভোগি আব্দুল খালেক(৬৫), বেগম(৫২), কদভানু(৬০), সুলতান(৬৭)সহ আরও অর্ধ শতাধিক পরিবার। তাদের অভিযোগ তাদের ঘরবাড়ির জায়গা জমি প্রতি বছর বংশাই নদীর গ্রাস করেই যাচ্ছে কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। তাই ঘরবাড়ি রক্ষার জন্য অতি শিঘ্রই ব্লক বা জিও ব্যাগ স্থাপন করে বাধ নির্মান করে ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা পেতে সরকারের নিকট সাংবাদিকদের মাধ্যমে আবেদন জনিয়েছেন । মাঝালিয়া, গুনটিয়া, চুকুরিয়া, বরাটি, পুষ্টকামুরী, দেওহাটা, কোর্ট বহুরিয়া, বহুরিয়া, কামারপাড়া, নাগরপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা নদী ভাঙ্গনে বহু পরিবার দিশেহারা হয়ে পরেছেন। ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,ব্রিজ, কালভার্ট, রাস্তা-ঘাট, হাট বাজারসহ ফসলি জমি। এছাড়া বংশাই নদীর থলপাড়া ব্রিজ, ত্রিমোহন এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেন ব্রিজ, কোদালিয়া এলাকায় লতিফপুর ব্রিজ, হাটুভাঙ্গা ব্রিজ, লৌহজং নদীর উপর নির্মিত গুনটিয়া ব্রিজ, বরাটি এলাকায় বাবু দুঃখীরাম রাজবংশী ব্রিজ, পুষ্টকামুরী ব্রিজ, পাহাড়পুর ব্রিজ, বহুরিয়া এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম নুরু ব্রিজ এবং ওয়ার্শি ব্রিজ হুমকির মুখে বলে ভুক্তভোগি এলাকাবাসি জানিয়েছেন। একাধিক ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবার অভিযোগ করেছেন, নদী ভাঙ্গনে লাখ রাখ টাকার ক্ষতিগ্রস্থ্য হলেও প্রশাসন থেকে তারা কোন সহায়তা পাননি।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবারগুলোর মাঝে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এমপি মহোদয় ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ জানান, বন্যার পানি কমে যাওয়ার সাথেসাথেই এই ইউনিয়নের বংশাই নদীতে ভাঙ্গন শুরু হয়। এ বছর ভাঙ্গনের মাত্রা ব্যাপক আকার ধারন করছে। ভাঙ্গনে ফতেপুর বাজার সংলগ্ন পাকা রাস্তা বিলিন হয়ে। মির্জাপুর উপজেলার সঙ্গে বাসাইল উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। হাট ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, মসজিদ. হাট ফতেপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র, ইউনিয়ন ভুমি অফিস, মির্জাপুর-বাসাইল রাস্তা, ফতেপুর-মহেড়া-মির্জাপুর রাস্তাসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান এবং হাট ফতেপুর হাট ও বাজার এখন হুমকির মুখে। একই কথা বললেন সাবেক সেনা সদস্য তাহের উদ্দিন এবং কৃষক মনির হোসেন। তারা বলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৫-১৬শ শিক্ষার্থী চরম বিপাকে পরেছেন। নদী ভাঙ্গন থেকে থেকে রক্ষার জন্য শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসি মানব বন্ধনও পালন করেছে। তারপরও প্রশাসেনর টনক নরেনি। বংশাই নদীর ভাঙ্গনের ফলে ফতেপুর, থলপাড়া, বৈল্যানপুর, হিলড়া আদাবাড়ি বাজার, গোড়াইল, গাড়াইল, পুষ্টকামুরী পুর্বপাড়া, বাওয়ার কুমারজানি, ত্রিমোহন, বান্দরমারা, যুগিরকোপা, রশিদ দেওহাটা চাকলেশ^রসহ বিভিন্ন গ্রামের রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাত হোসেন বলেন, ফতেপুর ইউনিয়নের বংশাই নদীতে ভাঙ্গন প্রতিরোধের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। মির্জাপুর পৌরসভার কুমুরজানি এলাকার বংশাই নদীতে অবস্থিত আলহাজ¦ একাব্বর হোসেন এমপি সেতুর পূর্বপাশের ঘরবাড়িগুলো ব্যপক ভাঙ্গনের বিষয়টি সংশ্লিষ্ঠ প্রকৌশলী পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।

মির্জাপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলার পৌরসভার বাওয়ার কুমারজানি,পুষ্টকামুরী উত্তরপাড়া গাড়াইল, ফতেপুরে, গোড়াই, আজগানা ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বিষয়টি তিনি স্থানীয় প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং মাননীয় সংসদ সদস্যকে জানিয়েছেন। বরাদ্ধ পাওয়া গেলে ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবারগুলোকে দ্রæত সময়ের মধ্যে সহায়তা দেওয়া হবে।

প্রতিদিনের খবর পড়ুন আপনার ইমেইল থেকে
টাঙ্গাইল বিভাগের সর্বশেষ
টাঙ্গাইল বিভাগের আলোচিত
ওপরে