রংপুর সরকারি কলেজের শহীদ মোসলেম উদ্দীন ছাত্রাবাস প্রায় দুইশত বছর আগে নির্মিত। আট বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষনা করা এ ছাত্রাবাসে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন ৬০ জন শিক্ষার্থী। ভবনটির অবস্থা এতই নাজুক যে চারপাশে তাকালেই মনে হয়, এখনই বুঝি ধসে পড়বে ভবনটি। অবিলম্বে ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনটি ভেঙ্গে মানসম্মত ছাত্রাবাস নির্মাণের দাবি জানিয়েছে সাধারন শিক্ষার্থীরা।
রংপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে শহীদ মোবারক সরণীতে(সেন্ট্রাল রোড অবস্থিত) এই ভবনটি ছিলো বিখ্যাত জমিদার গুরু প্রসন্ন লাহিড়ীর বাসভবন। প্রায় দু’শত বছর আগে এক একর জায়গা নিয়ে নির্মিত হয়েছিলো এ ভবন। ১৯৬৩ সালে রংপুর কলেজ প্রতিষ্ঠার পর এটি কিছুদিন কলেজ ক্যাম্পাস হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কলেজ বর্তমান অবস্থানে সরিয়ে নেয়ার পর থেকে ওই ভবনটি ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
২০১১ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষনা করে। ভবনটি বসবসার জন্য নিরাপদ নয় বলে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ভবনের সামনে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়া হলেও সেটিকে অগ্রাহ্য করে ভবনটিতে থাকছেন ৬০ জন শিক্ষার্থী।
পরিত্যক্ত ভবনে কেন অবস্থান করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রাবাসের মনিটরিং এর দায়িত্বে থাকা মিথু হোসেন বলেন, মেসে থাকার মত আর্থিক সামর্থ না থাকায় আমরা অন্য জায়গায় যেতে পারছি না। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ভবনে আছি।ছাত্রাবাসের অন্যান্য ছাত্ররাও একই কথা বলেন।
সার্বিক বিষয় জানতে ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ হারুন অর রশীদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষনা করার পর ঝুঁকি এড়াতে ছাত্রদের থাকার জন্য টিন শেটের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন ছাত্রাবাসের জমিটি ভূমি মন্ত্রালয়ের। সেটি কলেজের নামে বরাদ্দ দেয়ার জন্য ২০১২ সালের ১৬ নভেম্বর আবেদন করা হয়। ভূমি মন্ত্রালয় রংপুর জেলা প্রশাসনকে এ ব্যাপারে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। জমিটি বরাদ্দ পেলে সেখানে ছাত্রাবাস নির্মাণ করা হবে।