ফেনীর বেসরকারি সিটি কলেজ শিক্ষামন্ত্রনালয়ের নির্দেশ অমান্য করে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া উচ্চ আদালতের আদেশও পালন না করে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান অব্যাহত রাখায় যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিধি মোতাবেক ৩ বছরের মধ্যে ক্রয়কৃত নিজস্ব জায়গায় ভবণ তৈরি করে প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করার ভিত্তিতে ২০১২ সালের ১ জুলাই শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি প্রদান করে শিক্ষামন্ত্রনালয়। কিন্তু কলেজটির যাত্রা শুরুর ৭ বছরেও শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করে ভাড়াকৃত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান অব্যাহত রেখেছে ফেনী সিটি কলেজ। এতে করে যে কোন সময় কলেজটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ভূগছেন কলেজের কয়েকজন পরিচালক ও শিক্ষকরা।
আবদুর রশিদ বাবুল নামে এক অভিভাবক জানিয়েছেন, গত ১৩ ফ্রেব্রুয়ারি হাইকোর্ট ফেনী সিটি কলেজ ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করে তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। বিচারপতি নাঈমা হায়দার, আবু তাহের ও সাইফুর রহমানের গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। একই সঙ্গে ৪ সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেন। এতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রনালয়ের সচিব, ফেনী জেলা প্রশাসক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ডিরেক্টর জেনারেল, কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান, কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের পরিদর্শক, ফেনী পৌর মেয়র, ফেনী সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ও ফেনী ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষকে বিবাদী করা হয়। ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ দেখিয়ে শত বছরের পুরাতন ভেঙে ফেলার নির্দেশনা চেয়ে আদালতে শুনানী করেন ড. মোঃ ইউনুস আলী আখন্দ। এর আলোকে আদালত ১৩ ফেব্রুয়ারী রুল জারীপূর্বক সংশ্লিষ্টদের প্রতি জবাব দাখিলের নির্দেশ দিলেও আইনের তোয়াক্কা করছে না কলেজ কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরও এইচএসসি ভর্তির কার্যক্রম শুরু করে ব্যানার পেষ্টুনের পাশাপাশি পত্রিকায়ও বিজ্ঞাপন দিয়েছে।
অন্যদিকে ফেনী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ বলেন,‘ভবনটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় ২০১৩ সালের ১৩ জুন ফেনী সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ফেনী পৌরসভা বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে তৎকালীন পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন হাজারী ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেন। একই সঙ্গে ২০ জুনের স্মারকের আলোকে ১৫ দিনের মধ্যে ওই স্থান থেকে কলেজটি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন মেয়র। কিন্তু আজ পর্যন্ত কলেজ কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশটি কার্যকর করেনি।’
এছাড়া কলেজটির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, মানহীন শিক্ষকদের দিয়ে পাঠ দান, কলেজের আশপাশে বখাটে কর্তৃক ছাত্রী ইভটিজিংয়ের ঘটনায় নিরব ভূমিকা পালনসহ নানা অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে ফেনী সিটি কলেজের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জিয়া বলেন, ভবনটি ঝূঁকিপূর্ণ হওয়ায় এখান থেকে শ্রেণীকক্ষ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে আপতত ভবণটিতে কয়েকজন ছাত্রের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।