১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

samakalnew24
samakalnew24
শিরোনাম:
ফরিদগঞ্জের প্রখ্যাত হোমিও ডাক্তার নারায়ণ চক্রবর্তীর... তাহেরপুরের তিনশত বছরের বৃক্ষের নাম আজো অজানা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রাণিসম্পদের বিকল্প নেই : ইউএনও... প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী সড়ক দুর্ঘটনায় সংগীতশিল্পী পাগল হাসান সহ নিহিত-২ আহত-৩

হালদার উৎপত্তিস্থলে তামাক চাষে নদী দূষণ প্রতিরোধে দুদক’র পরিদর্শন

 এম. সাইফুল ইসলাম,খাগড়াছড়ি সমকালনিউজ২৪

এশিয়া মহাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্যপ্রজনন ক্ষেত্র বাংলাদেশের হালদান নদী। আর এ নদীর উৎপত্তিস্থল খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি ও রামগড় উপজেলায়। সম্প্রতিকালে নদীর উৎপত্তিস্থল মানিকছড়িতে অবাধে তামাক চাষে অর্থ বিনিয়োগ করছে ব্রিটিশ আমিরিকান টোবাকো কোং লি.। তামাক চাষের ফলে চুল্লি ও তামাক গাছের অবশিষ্ট অংশ(মূল ও কান্ড) থেকে নিগৃত রস অনায়াসে গড়িয়ে পড়ছে হাদলা খালে। এতে মৎস্যপ্রজনন মারাক্তভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এ নিয়ে ইলেকট্রনিক ও সংবাদপত্রে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পর সংবাদের সত্যতা যাচাই করতে ৩০ এপ্রিল সরজমিন পরির্দশনে যান দুদক টিম।

সরজমিন ও দুদক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ তথা এশিয়া মহাদেশে একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্যপ্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর চারিপাশে ভরাট ,পরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন ও নদীর উৎপত্তিস্থলে তামাক চাষ বিস্তার লাভ করেছে। এতে করে দুষিত হচ্ছে হালদা নদীর পানি! সম্প্রতি এ বিষয়ে চ্যানেল ২৪সহ বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়রি সত্যতা যাচাইসহ পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)। ৩০ এপ্রিল সকাল ১১টায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় রাঙ্গামাটির সহকারি পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম ও মো.আবুল বাশার সরজমিন পরিদর্শণে মানিকছড়ি আসেন। এ সময় জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের প্রতিনিধি ও জেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ রিয়াজুর রহমান ও উপজেলা মৎস্য অফিসের ক্ষেত্র সহকারি মিলন কান্তি চাকমা উপস্থিত ছিলেন। দুদক টিমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন মানিকছড়ি থানা পুলিশ।

সরজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায় প্রাকৃতিক মৎস্যপ্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর উৎপত্তিস্থল রামগড় উপজেলার পাতাছড়া । আর এ নদীর সংযোগ স্থল মানিকছড়ির গোরখানা সংলগ্ন ডলুখাল। হালদা এবং ডলুখালের সংযোগ স্থল ঘিরে অবাধে চাষ হচ্ছে তামাক! অথচ বিগত ৮/১০ বছর পূর্বে এসব লোকালয়ে চাষ হয়েছিল রেশমচাষ। রেশম পোঁকার একমাত্র খাদ্য ছিল ‘তুত গাছ’। তুত গাছের পাতা খেয়ে রেশম পোঁকা অবাধে রেশম(সুতা) বুনত। কিন্তু অজ্ঞাতকারণে হঠাৎ করে রেশম চাষ বন্ধ কার্যক্রম গুঁটিয়ে নেয় তুলা উন্নয়ন বোর্ড। ফলে ওইসব জনপদে দৃষ্টি পড়ে তামাক কোম্পানীর! শুরু হয় তামাকের চাষ! এতে প্রতিনিয়ত দূষিত হতে থাকে হাদলার সূপেয়পানি। দূষিত পানি অবাধে হালদা মিশে ব্যাঘাত ঘটে মৎস্যপ্রজননে! বিষয়টি দৃষ্টিগোছর হয় হালদা গবেষক দলের। তাঁরা একাধিকবার সরজমিন পরিদর্শন করে তামাক চাষ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

৩০ এপ্রিল সরজমিন পরিদর্শনে দুদক টিমের সহকারি পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম তামাক চাষের সত্যতা পেয়ে হালদা দূষণে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্যপ্রজনন ক্ষেত্র হালদার উজানে অবাধে তামাক চাষ ও বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পরিবেশ হুমকিরমূখে পড়েছে। মূল হালদার সংযোগ স্থল ডলুখালের চারিদিকে অবাধে তামাক চাষ ও অসংখ্য চল্লি এখনো দৃশ্যমান! তামাকের জমি থেকে অনায়াসে পানি গড়িয়ে পড়ছে হালদায়। এতে ব্যাহত হচ্ছে মৎস্যপ্রজনন! আজ আমরা সরজমিনে এর সত্যতা পেয়েছি। এ নিয়ে কৃষি.মৎস্য ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে পরামর্শ করে পরবর্তী কৃষি মৌওসুমে যাতে হালদার উজানে কেউ তামাক চষে অর্থ বিনিয়োগ করতে না পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রতিদিনের খবর পড়ুন আপনার ইমেইল থেকে
খাগড়াছড়ি বিভাগের সর্বশেষ
খাগড়াছড়ি বিভাগের আলোচিত
ওপরে