৪ঠা অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

samakalnew24
samakalnew24
শিরোনাম:
খেয়ে না খেয়ে ঝুপড়ি ঘরে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন তালতলীর... নোয়াখালীতে মানুষের ধারে ধারে ব্যারিস্টার পারভীন... কুয়াকাটায় ধরা পড়ল দুই কেজির ইলিশ তীব্র গরম ও রোদে পুড়ছে সিলেট হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হিরো আলম

এসএসসি প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গ্রেফতার ৩; চারটি বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত

 মোঃ আজিজুল হক,ভূরুঙ্গামারীঃ সমকাল নিউজ ২৪

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে কেন্দ্র সচিবসহ দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চারজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হলেও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অন্যতম সহযোগী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে আসামী না করায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় চার বিষয়ের পরিক্ষা স্থগিত করেছে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড।

জানাগেছে, থানায় প্রশ্ন বাছাইয়ের (সর্টিং) সময় ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ঐ কেন্দ্রের কেন্দ্রসচিব লুৎফর রহমান দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার আব্দুর রহমানের যোগসাজসে বাংলা ১ম পত্রের প্রশ্নপত্রের প্যাকেটের ভিতর বাংলা ২য় পত্র, ইংরেজি ১ম ও ২য় পত্রের প্রশ্নপত্রের একটি করে খাম ঢুকিয়ে নেন এবং প্যাকেট সীলগালা করে তার ওপর স্বাক্ষর করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান। বাংলা ১ম পত্রের পরীক্ষার দিন যথানিয়মে থানা থেকে বাংলা ১ম পত্রের প্যাকেট এনে তা খুলে বাংলা ২য় পত্র, ইংরেজি ১ম ও ২য় পত্রের খামটি কৌশলে সরিয়ে ফেলেন। এসময় কেন্দ্রে দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার বোর্ডের দেয়া তালিকা অনুযায়ী পাঠানো প্রশ্নেপত্রের খাম গণনা করার নিয়ম থাকলেও তারা দায়িত্ব অবহেলা করে তা করেননি।

পরে প্রধান শিক্ষক কয়েকজন শিক্ষকের সহায়তায় ফাঁস করা প্রশ্নপত্রের উত্তরমালা তৈরী করে ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে (চুক্তিতে সবসেট) ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা মূল্যে বিক্রি করেন। প্রশ্নফাঁসের ঘটনাটি স্থানীয় সাংবাদিকদের নজরে এলে বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করা হলে তারা প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেন। পরে ইংরেজি ২য় পত্র পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় নড়েচড়ে বসেন পুলিশ ও প্রশাসন।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) ইংরেজি ২য় পত্র পরীক্ষা দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপক কুমার দেব শর্মা, সহকারী পুলিশ সুপার মোর্শেদুল হাসান, ওসি আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল প্রধান শিক্ষকের কক্ষে অভিযান চালিয়ে গণিত, কৃষি বিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়নের প্রশ্নপত্র পায়। যে বিষয় গুলোর পরীক্ষা এখানো হয়নি। উল্লেখ্য, পুলিশ জানতে পারে একইভাবে ইংরেজি ১ম পত্রের পরীক্ষার প্যাকেটে এই প্রশ্নগুলো ঢুকানো ছিলো। আর এ প্রশ্নগুলো প্রধান শিক্ষকের কক্ষে রয়েছে নিশ্চিত হয়ে তারা অভিযান চালায়। পরে বিকালে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান ও প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানকে থানায় আনলেও রাতে প্রধান শিক্ষককে আটক করা হয় এবং মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে ইংরেজি শিক্ষক আমিনুর রহমান রাসেল, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক জোবায়ের হোসাইনকে আটক করে এবং বুধবার ভোরে হামিদুল ইসলাম, সোহেল আল মামুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। মামলার অপর আসামী ক্লার্ক আবু হানিফ পলাতক রয়েছে। প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, পুলিশ সুপার আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম, দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপক কুমার দেব শর্মা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কক্ষে প্রায় তিন ঘন্টাব্যাপি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে তার অপেক্ষমান সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথা না বলে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

এবিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার মোর্শেদুল হাসান জানান, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ট্যাগ অফিসার আদম মালিক চৌধুরি বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। পরবর্তী পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হবে কিনা তা বোর্ড কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।

ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, তিনজন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মামলা হয়েছে।

আসামীদের কুড়িগ্রাম জেলহাজতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। আরো কারো সম্পৃক্ততা থাকলে তাদেরকেও গ্রেপ্তার করা হবে।

প্রতিদিনের খবর পড়ুন আপনার ইমেইল থেকে
কুড়িগ্রাম বিভাগের আলোচিত
ওপরে