৩১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১৫ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

samakalnew24
samakalnew24
শিরোনাম:
চাঁদপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ব্যবসায়ী নিহত চাঁদপুরে ইয়াবা-ফেন্সিডিলসহ যুবক-যুবতী আটক গ্রাহক সেবা পক্ষ উদযাপনে বেতাগীতে বৃক্ষরোপণ ও পুরস্কার... ইসাহাকের খুনিদের ফাঁসির দাবিতে পীরগঞ্জে বিক্ষোভ ও... পার্বতীপুরে ২৮ শে অক্টোবর লগি-বৈঠার নির্মম নারকীয়...

মির্জাগঞ্জে ঐতিহাসিক মজিদবাড়ীয়া শাহী মসজিদ শ্রীহীন হয়ে পড়েছে সংস্কারের অভাবে।

 হাসান আলী , পটুয়াখালী প্রতিনিধি। সমকাল নিউজ ২৪

Warning: Use of undefined constant yes - assumed 'yes' (this will throw an Error in a future version of PHP) in /home/samakaln/public_html/wp-content/themes/samakalnews24/template-parts/content.php on line 37

মির্জাগঞ্জ উপজেলার মজিদবাড়ীয়া গ্রামে পঞ্চদশ শতাব্দীতে নির্মিত পুরাতন মসজিদ সুলতানী আমলের স্থাপত্য কীর্তি নিয়ে আজও স্বগৌরবে দাড়িয়ে আছে। স্থানীয়ভাবে এই মসজিদটি মজিদবাড়ীয়া শাহী মসজিদ নামে পরিচিত। মির্জাগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ১৮ কিলোমিটার দক্ষিনে এই মসজিদটি অবস্থিত। বাংলার স্বাধীন ইলিয়াস শাহীর শাসনামলের শেষ দিকে নাসির উদ্দিন বারবক শাহের (১৪৫৯-১৪৭৬ খ্রীঃ) শাসনামলে খান-ই-মোয়াজ্জেম উজিয়াল খান ১৪৬৫ খ্রীষ্টাব্দে এ মসজিদটি নির্মান করেন। মসজিদটির নামানুসারেই স্থানীয় গ্রাম ও ইউনিয়নের নামকরন করা হয়েছে।মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৪৯ ফুট এবং প্রস্থ ৩৬ ফুট। মসজিদটির পূর্বের দিকে একটি বারান্দা রয়েছে। যার দৈর্ঘ্য ২১.৫ ফুট এবং প্রস্থ ৮ ফুট।মসজিদটির প্রধান কামড়া বর্গাকারে নির্মিত এবং প্রত্যেকটির বাহু ২১.৫ ফুট লম্বা। মসজিদের দেয়ালগুলো প্রায় সাড়ে ৩ ফুট চওড়া।মসজিদের পূর্ব দিকে ৩টি এবং উত্তর ও দক্ষিন দিকে ৪টি দরজা রয়েছে। পশ্চিম দিকের দেয়ালে রয়েছে ৩টি মেহরাব। যার মাঝখানেরটি পার্শ্ববর্তী দুইটার চেয়ে আকারে বড়। প্রধান কামড়ার উপরে আধা গোলাকৃতির একটি বিরাট গম্ভুজ রয়েছে। বারান্দার ছাদ চৌচালা ঘরের আকারে নির্মিত।মসজিদটির প্রধান কামড়ার চার কোনায় ৪টি এবং বারান্দার ২ কোনায় ২টি মিনার আছে। ব্রিটিশ আমলের শেষ দিকে জঙ্গল পরিস্কারের সময় এ মসজিদটির সন্ধান পাওয়া যায় আর এ কারনে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে একটি ভ্রান্ত ধারনা ছিল যে-এ মসজিদটি মাটির নীচ থেকে অলৌকিক ভাবে গজিয়ে উঠেছে। মসজিদ সংলগ্ন একটি বিরাট দীঘি রয়েছে। দীঘিতে বাঁধানো ২টি ঘাটে মুসুল্লীরা অজু করে নামাজ আদায় করতেন। বাঁধানো ঘাট ২টি দীঘির মধ্যে দেবে গেছে আর এ কারনে স্থানীয় বাসিন্দারা গাছের গুড়ি ফেলে ওজু করা সহ যাবতীয় কাজ সারছেন। মসজিদের কাছে একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। মসজিদ সংলগ্ন চত্ত্বরে প্রতি বছর ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় । মাহফিলের সময় দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার ধর্মপ্রান মুসলমান এ মাহফিলে শরীক হন। বাংলাদেশ প্রত্নতত্ব বিভাগের উদ্যোগে মসজিদটি দুইবার ও দীঘিটি সংস্কার করা হয়।দূর-দূরান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য এরশাদ সরকারের শাসনামলে মির্জাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ একটি বিশ্রামাগার নির্মান করে দেয়। কিন্তু বিশ্রামাগারটি নির্মানের পর এ যাবৎ পর্যন্ত কোন সংস্কার না করার ফলে বর্তমানে এটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

 

প্রাচীন স্থাপত্যকলার উজ্জ্বল নিদর্শন এ শাহী মসজিদটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে বহু দর্শনার্থী মজিদবাড়ীয়া গ্রামে আসেন । কিন্তু দর্শনার্থীদেও এখানে থাকা ও খাওয়ার কোন সুব্যবস্থা নেই, নেই কোন ব্যবহারযোগ্য শৌচাগার । ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা বিশ্রাম নিতে পারছেন না এবং শৌচাগার না থাকায় প্রাকৃতিক কাজ সারতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে । বাংলাদেশ প্রত্নতত্ব বিভাগের উদ্যোগে মসজিদটি দুইবার সংস্কার করার পর বর্তমানে সৌর বিদ্যুতের সংযোগ থাকায় রাতের বেলায় স্থানীয় মুসুল্লীরা নিরাপদে নামাজ আদায় করা সহ আগত দর্শনার্থীরা মসজিদেও বারান্দায় বিশ্রাম নেন। মসজিদের দেয়ালগুলোতে আগাছা গজিয়ে উঠেছে । স্থানীয় কোন জনপ্রতিনিধি বা কোন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে কোন দেখ ভাল না করায় এটি এখন শ্রীহীন হয়ে পড়েছে । কে বা কারা মসজিদেও দক্ষিন পশ্চিম কোনের পিলারের বেশ কিছু ইট খুলে নিয়ে যাওয়ায় প্রাচীন এ মসজিদটির সৌর্ন্দয্য এখন নাম মাত্র ।আগত দর্শনার্থীদের দেয়া দান-ছদকার টাকায় মসজিদের ইমামের বেতন প্রদান সহ আনুষাঙ্গিক প্রয়োজনীয় খরচ বহন করা হয় বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান ।

 

ঢাকার থেকে মসজিদটি দেখতে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী আছিব,জাকির হোসেন ও সাইদুজ্জামান শাওন বলেন- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মসজিদটির ছবি দেখে মসজিদটি দেখতে এসেছিলাম ।কিন্তু এসে দেখি এটির অবস্থা খুবই করুন,প্রাচীন এ মসজিদটি জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার সহ আগত দর্শনার্থীদের জন্য একটি বিশ্রামাগার নির্মান ও উন্নতমানের শৌচাগার নির্মানের জন্য দাবী জানান ।

 

এ ব্যাপারে মজিদবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার কিসলু বলেন, তিন বছর আগে আমি স্থানীয় কয়েকজনকে নিয়ে প্রত্যতত্ত্ব বিভাগে যোগাযোগ করে সংস্কারের আবেদন করলে চলতি বছরে তারা নিজস্ব ঠিকাদার দিয়ে মসজিদের কিছু সংস্কার করে চলে যায় ।তবে বিশ্রামাগারটি সংস্কার করা বা নতুন একটি বিশ্রামাগার ও উন্নতমানের শৌচাগার নির্মানের জন্য উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলবো।

প্রতিদিনের খবর পড়ুন আপনার ইমেইল থেকে
পর্যটন বিভাগের আলোচিত
ওপরে